চীনে উৎপত্তি হওয়া নভেল করোনাভাইরাসের বিষাক্ত ছোবল নীল আমেরিকা ও ইউরোপীয়ান দেশগুলো। মানুষ মরছে ঝাঁকে ঝাঁকে। কেন এমন হচ্ছে? কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা লন্ডন এবং মিডল্যান্ডসের মতো করোনভাইরাস হটস্পটগুলিতে অধিক মৃত্যুর সঙ্গে উচ্চ মাত্রার বায়ু দূষণের একটা সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন।
যদিও তাদের এই গবেষণাটির সম্পূর্ণ অংশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এটি এখনো পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে। তবে যে অংশটুকু প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে করোনায় অধিক মৃত্যুর সঙ্গে বায়ু দূষণের সম্পর্কের প্রমাণ উঠে এসেছে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআরসি টক্সিকোলজি ইউনিটের গবেষকরা ইংল্যান্ডের সাতটি অঞ্চল থেকে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড (এনও-২) এবং নাইট্রোজেন অক্সাইডের (এনওএক্স) স্তরের নমুনা নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। করোনাভাইরাস আঘাত হানার পরের বায়ু দূষণের পরিমাণের সঙ্গে আগের ডাটা বিশ্লেষণে অধিক মৃত্যুর এই সম্পর্ক উঠে এসেছে। গবেষকরা ২০১৮-১৯ সালের বায়ুর নমুনাও বিশ্লেষণ করেছেন।
দলটি প্রতিদিনের নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইডের স্তরের বার্ষিক গড়কে প্রতিটি অঞ্চলে মোট করোনভাইরাস সংক্রমণের সঙ্গে তুলনা করলে তারা দেখতে পান যে বায়ু দূষণকারী মাত্রা যেখানে বেশি, করোনভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যাও সেখানে তত বেশি। লন্ডন এবং মিডল্যান্ডসে এটি বিশেষভাবে সত্য ছিল, যেখানে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি ছিল।
গবেষকরা বলছেন যে তাদের অনুসন্ধানগুলি কেবল একটি পারস্পরিক সম্পর্ককে দেখায় এবং বায়ু দূষণ করোনভাইরাসকে আরো বিধ্বংসী করে তোলে কি-না তা নিশ্চিত করার জন্য আরো গবেষণা প্রয়োজন।
এমআরসি টক্সিকোলজি ইউনিটের পিএইচডি শিক্ষার্থী মার্কো ট্র্যাভাগ্লিও বলছিলেন, ‘আমাদের ফলাফলগুলি প্রথম প্রমাণ দেয় যে সার্স-কোভি -২ কেসের মারাত্মকতা ইংল্যান্ডের বর্ধিত নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের স্তরের সাথে জড়িত। লন্ডন, মিডল্যান্ডস এবং উত্তর পশ্চিম এই বায়ু দূষণকারী পদার্থের সর্বাধিক ঘনত্ব দেখা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সর্বনিম্ন দূষণ ছিল। সেখানে কভিড -১৯ এর সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যাও একেবারেই কম।
গবেষণা পত্রটির সিনিয়র লেখক ড. মিগুয়েল মার্টিনস আরো বলেছেন, ‘আমাদের গবেষণায় উত্তর ইতালি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান মৃত্যু ও সেখানকার বায়ু দূষণের পরিমাণও যুক্ত করা হয়েছে। দেখ গেছে যে উচ্চ মাত্রার বায়ু দূষণের কারণে এসব এলাকায় কভিড-১৯ সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি হয়েছে।
সূত্র- এয়ার কোয়ালিটি নিউজ।