গন্ধ শুঁকে লুকিয়ে থাকা আরডিএক্স, বিস্ফোরক খুঁজে দেওয়া তার কাছে কোনো ব্যাপারই নয়। যে কোনো তদন্তকে সঠিক পথ দেখাতে কুকুরের অস্ত্র স্রেফ তার ঘ্রাণশক্তি। গন্ধ শুঁকে নিখোঁজ মানুষকে উদ্ধার করতেও তাদের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু চমকপ্রদ বিষয়টি হলো, এবার নিজেদের ঘ্রাণশক্তি কাজে লাগিয়েই উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত রোগীকে চিহ্নিত করবে কুকুর। যুক্তরাজ্যের বিমানবন্দরগুলোতে আসা উপসর্গহীন করোনায় আক্রান্ত যাত্রীদের চিহ্নিত করবে।
লন্ডনের মেডিক্যাল ডিটেকশন ডগস সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ক্লেয়ার গেস্ট বলেন, সারা বিশ্বে থেকে যুক্তরাজ্যে মানুষ আসবে। হতে পারে তারা করোনায় আক্রান্ত। তাদের শরীরে উপসর্গ ছাড়াও করোনা থাকতে পারে। বিমানবন্দরে আসা প্রতিটি যাত্রীর গন্ধ শুঁকবে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর। মাত্র শূন্য দশমিক পাঁচ সেকেন্ড লাগবে এই কাজটি করতে। কুকুরটি দ্রুত সনাক্ত করতে পারবে যে কোন লোকের করোনার আরো পরীক্ষা দরকার এবং কার আইসোলেশনে যাওয়া দরকার। এভাবে যুক্তরাজ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়া রোধ করে সহযোগিতা করবে কুকুর।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, সব অসুখ ও ভাইরাসের নিজস্ব কিছু গন্ধ থাকে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর শরীরের কিছু নমুনার গন্ধ প্রথমে শুঁকতে দিতে হবে কুকুরদের। তারপর তাদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রোগীদের দ্রুত শনাক্ত করার চেষ্টা করা যেতে পারে।
ক্লেয়ার গেস্টের কথায়, প্রশিক্ষণ দিলে কুকুর করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত করতে পারবে। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। তবে কিভাবে সংক্রমিত রোগীর কাছ থেকে ভাইরাস সংগ্রহ করে আমরা নিরাপদে তা কুকুরের সামনে তুলে ধরব, এখন সেটাই দেখার। আমাদের লক্ষ্য, কুকুরকে এমনভাবে ট্রেনিং দেওয়া যাতে তারা করোনা রোগীর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক অবস্থায় থাকা রোগীকেও চিহ্নিত করতে পারে। এর ফলে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসও উপকৃত হবে।
এর আগে ম্যালেরিয়া, ক্যান্সার, পার্কিনসন্স ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন আক্রান্ত রোগীদের গায়ের গন্ধ শুঁকে বা তাদের শরীর থেকে নেওয়া কোনো নমুনার গন্ধ শুঁকে অসুখ চিহ্নিত করেছে লন্ডনের ওই সংগঠনের প্রশিক্ষিত কুকুর। কুকুরের এই ঘ্রাণশক্তির সাহায্যে অসুখের গন্ধ বিচারের বিষয়টিও তাই এবার ফের কাজে লাগাতে চায় ব্রিটেন।
সূত্র: ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে।