মোঃ খাইরুল ইসলাম কাইউম, ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি।
পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার পৌরসভাধীন দক্ষিন ভান্ডারিয়া গ্রামে জমি বিরোধের জের ধরে গতকাল ১০ জুন বুধবার একই পরিবারের ৬ জনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছেন সন্ত্রাসীরা।
আহতরা হলেন ভান্ডারিয়া পৌরসভা ৭ নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সিনিয়র সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবুল (৬০), তার বড় ছেলে মমতাজুল ইসলাম সবুজ (৩৫), মেয়ে তাজিয়া সুলতানা সোমা (৩৭),মেজো ছেলে মেহেদী হাসান (২৮),মেয়ে জামাই মোঃ মামুন খলিফা (৪৫), সবুজের স্ত্রী খাদিজা বেগম (২৫) এবং মামুনের ছেলে মাইনুল ইসলাম তুষার (১৮)। এদের মধ্যে আ’লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল, মমতাজুল ইসলাম সবুজ, তাজিয়া সুলতানা সোমা এবং খাদিজা বেগমকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং বাকিদের ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
আহত মেহেদী হাসান ও এজাহার সুত্রে জানা যায় যে, দীর্ঘদিন ধরে শহিদুল ইসলাম বাবুলের সাথে জমি নিয়ে প্রতিবেশী হোসেন বেপারীর ছেলে নাসির বেপারির সাথে বিরোধ চলে আসছে। ওই জমি নিয়ে আদালতে বন্টন মামলা চলমান রয়েছে।
গতকাল ১০ই জুন বুধবার বিকেলে জমি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সালিশ মিমাংসার কথা ছিল।
ঐ দিন ই দুপুর ১ টার দিকে দুলাল সরদার, নাসির উদ্দিন বেপারী , নীরু বেপারী, ছিরু বেপারী,সাইদুল বেপারী, নিপা আক্তার সহ তাদের ১০/১৫ জন সহযোগী সন্ত্রাসীরা হত্যার চেষ্টায় শহীদুল ইসলাম বাবুলের পরিবারের ৬ জনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেন। দুলাল সরদার তাহার হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে শহীদুল ইসলাম বাবুলকে কোপ দিলে বাবুল তা হাত দিয়ে ঠেকাইলে ঐ কোপ তাহার বাম হাতে কব্জির নিচে পড়িয়া চামড়া মাংস সহ রক কাটিয়া গুরুতর জখম হয় এবং কনুর নিচে রক্তাক্ত কাটা জখম হয়, তখন বাবুলের একমাত্র মেয়ে তাজিয়া সুলতানা সোমা ও তাহার ছেলে মমতাজুল ইসলাম সবুজ তাহাকে উদ্ধার করতে গেলে মোঃ নাছির উদ্দীন বেপারী তাহার হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়া তাজিয়া সুলতানা সোমার মাথার তালুতে কোপ দেয়,যাহাতে সোমার মাথার চাড়া কাটিয়া গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম হয় এবং সে মাটিতে পড়িয়া গেলে নাছির বেপারী সোমার গলা হইতে ১০ আনা ওজনের ১টি স্বর্নের চেইন ছিনিয়া নিয়া যায়, তৎসময় নীরু বেপারী মাছ কোপানো কোচ দিয়া মমতাজুল ইসলাম সবুজের মাথা লক্ষ্য করিয়া কোপ দেয়, ঐ কোচের কোপ লক্ষ্যভ্রস্ট হইয়া সবুজের বাম চোখে ও গালে পড়িয়া রক্তাক্ত জখম হয়, তখন সবুজের স্ত্রী খাদিজা বেগম,মাইনুল ইসলাম ও মামুন খলিফা ঘটনাস্থানে গিয়ে দুলাল সরদার গংদের কার্যকলাপের প্রতিবাদ করিলে দুলাল সরদার ক্ষিপ্ত হইয়া মমতাজুল ইসলাম সবুজের স্ত্রী খাদিজা বেগমের মাথা লক্ষ্য করিয়া কোপ দেয়, ঐ কোপ খাদিজা বেগম হাত দিয়া ঠেকাইলে তাহার ডান হাতের পান্জার উপর পড়িয়া রক্তাক্ত গুরুতর কাটা জখম হয়, তখন অপরদিকে সাইদুল বেপারী তাহার হাতের দাও দিয়া মাইনুল ইসলাম এর মাথা লক্ষ্য করিয়া কোপ দেয়,মাইনুল হাত দিয়া ঠেকাইলে তাহার বাম হাতের তালুতে পড়িয়া রক্তাক্ত কাটা জখম হয়, তখন সিরু বেপারী ও নিপা আক্তার মামুন খলিফাকে লাঠি দ্বারা এলোপাথাড়ী পিটাইয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট নীলা ফুলা জখম করে, ঐ সময় শহিদুল ইসলাম বাবুলের মেঝ ছেলে মেহেদি হাসান ঘটনাস্থলে যাওয়া মাত্র সিরু বেপারী লাঠি দ্বারা মাথায় লক্ষ্য করিয়া পিটান দেয়,মেহেদি মাথা সরাইলে ঐ পিটান লক্ষ্যভ্রস্ট হইয়া মেহেদির বাম চোখের নিচে পড়িয়া রক্তাক্ত কাটা জখম হয়।
তখন আহতদের ডাকচিৎকার শুনিয়া আশেপাশের লোকজন আসিয়া তাদের উদ্ধার করে তাৎক্ষনিকভাবে চিকিৎসা করার চন্য টমটম গাড়ী যোগে ভান্ডারিয়া উপজেলা হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শহীদুল ইসলাম বাবুল, তাজিয়া সুলতানা সোমা, মমতাজুল ইসলাম সবুজ ও খাদিজা বেগমের জখম গুরুতর মনে করিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন।
শহিদুল ইসলাম বাবুলের মেঝ ছেলে মেহেদি হাসান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভান্ডারিয়া থানার ওসি এস এম মকসুদুল রহমান জানান, উক্ত ঘটনায় ভান্ডারিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং ০৩, তারিখ. ১০.০৬.২০২০। আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হবে।