মোঃ আঃ হান্নান, ক্রাইম রিপোর্টার, সিলেট:
হবিগঞ্জ চুনারুঘাট উপজেলায় অবৈধ বালু পরিবহনের দায়ে মধ্যরাতে চালক ও মালিক’কে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেন “মিলটন চন্দ্র পাল” সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ। অনাদায়ে গাড়ি চালকে ৭দিনের জেল ও গাড়ির মালিক’কে ১মাস কারাদণ্ড।
অপরাধের বিবরণ – বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ধারা ৪(১)!, অপরাধ শাস্তি দ্বারা ১৫(১) এ প্রথম অপরাধী ও দ্বিতীয় অপরাধী কে আলাদা আলাদা করে ৫০ হাজার টাকা করে দুই জনকে মোট ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।
বাংলাদেশ ফরম নং ১২১-০৪৬৩৩৬৯, মামলার নম্বর ১৪৭/২০২০, তাং ১৫/০৭/২০২০, প্রসিকিউটরের নাম: রাষ্ট্র।
প্রথম আসামি: শাহিন মিয়া (৩০), পিতা: আব্দুল নুরু, বনগাঁও।
দ্বিতীয় আসামি:
আকরাম আলী (২০), পিতা: মরতুজ আলী, গংগা নগর, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ।
এ বিষয়ে আহাম্মাদাবাদ ২ নং ইউনিয়ন এর মোঃ দুলাল মেম্বার এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন এই মামলাটি একটি অমানবিক মামলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এই মহামারি করোনাভাইরাস কে উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে একজন ড্রাইভার এক ট্রাক্টর বালু নিয়ে তার গন্তব্যের দিকে যাচ্ছিলেন আনুমানিক রাত সাড়ে নয়টার দিকে। হঠাৎ করেই এসিলেন্ট গাড়িটিকে থামায় এবং তার চালকে বলা হয় তোমার মালিক কে ? তাকে আসতে বলো তোমাকে ছেড়ে দিব! মালিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তার কাছে দুই লক্ষ টাকা দাবি করেন। মালিক এই টাকা দিতে অপরাগতা স্বীকার করেন। একপর্যায়ে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। গাড়ির মালিক বলেন আমরা গরীব মানুষ স্যার এত টাকা কই পাবো ? ১ ট্রাক্টর বালুর দাম ২২শটাকা! এক ট্রিপ বালু বিক্রেতার কাছে পৌঁছে দিলে হয়তো ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ হয় তা দিয়ে সংসার ভালোভাবে চলে না। আর এই মহামারীতে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছি। তাদের কোনো কথাই শোনা হচ্ছিল না বলে ড্রাইভার ও মালিক অভিযোগ করেন। এসিল্যান্ড কর্মকর্তা তাদের কথা শুনতে অস্বীকৃতি জানান এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন। যদি এই মুহূর্তে টাকা না দাও তাহলে তোমাদেরকে কোর্টে চালান করে দিব সকালে!
ড্রাইভার বলেন স্যার দুই দিনে একটা খেপ মারছি তাতেও যদি সংসার না চালাইতে পাড়ি আমাদের মেরে ফেলেন! আমরা কই যাবো ?
এই রাস্তায় প্রভাবশালীদের শতশত গাড়ি ভর্তি বালু প্রতিনিয়ত নিজস্ব গন্তব্যে পৌঁছানো হচ্ছে কই তাদেরকে তো কিছু বলা হচ্ছে না? কিন্তু বছরের পর বছর অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তারা প্রশাসনের ধরাছোঁয়ার বাহিরে এখনো কেন?
প্রতিবাদ করতে না পারা অসহায়, গরীব, খেটে খাওয়া মানুষগুলো কোথায় যাবে? তারা কি আজ ও এই দেশে স্বাধীন ভাবে বসবাস করতে পারবে বলে মনে হয়!
আনুমানিক মধ্য রাতে খুব দ্রুত মোবাইল কোড বসিয়ে এই রায় প্রদান করেন চুনারুঘাট উপজেলার এসিলেন্ড মিলটন চন্দ্র পাল।
চুনারুঘাট হবিগঞ্জ জেলার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি বিষয়টি সঠিক তদন্ত এবং প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।