দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৮ জেলা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭২ জন মানুষ। এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানিয়েছেন এসব তথ্য।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যায় ১৮টি জেলার ৯২ উপজেলার ৫৩৫টি ইউনিয়ন দুর্গত হয়েছে। ২২ লাখ ২৬ হাজার ৪৭২ জন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জামালপুরে চারজন এবং লালমনিরহাট, সুনামগগঞ্জ, সিলেট ও টাঙ্গাইলে একজন করে মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে বন্যাজনিত কারণে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে আমরা আশা করছি। কারণ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। যেসব নদীর পানি বাড়ছে সেগুলোর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমতে শুরু করবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।’

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রতিবেদন তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। অপরদিকে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করবে এবং যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল হবে।

এনামুর রহমান বলেন, গঙ্গা-পদ্মার নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এ পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। কুশিয়ারা ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। অপরদিকে গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, নাটোর ও নওগাঁ জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।

বন্যায় আক্রান্ত ১২ জেলায় এক হাজার ৫৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ৩০ হাজার ৭০৫ জন মানুষ এবং ৫৬ হাজার ৩১টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আনসার, গ্রাম পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক ও এনজিও প্রতিনিধিরা কাজ করছেন।

বন্যার কারণে সরকার ৫৯৬টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরমধ্যে বর্তমানে ১৯৭টি টিম কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

ডা. এনাম বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আশ্রয়কেন্দ্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।