সানাউল্লাহ, দোহা (কাতার) প্রতিনিধি।

তিন বছর আগে কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে চার আরব দেশ। দীর্ঘদিন ধরেই দেশগুলোর সঙ্গে কাতারের কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালো নয়। শুধু তাই নয়, কাতারের সঙ্গে জল, স্থল ও আকাশসীমাও বন্ধ করে দিয়েছে এসব দেশ।

তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তিন বছর ধরে কাতারের ওপর যে অবরোধ আরোপ করা হয়েছে তা হয়তো কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক কর্মকর্তা কাতারের ওপর আরোপিত অবরোধের ইতি ঘটার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বুধবার ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ফলে এ বিষয়ে অনেকটাই অগ্রগতি হয়েছে এবং সব পক্ষই কিছুটা নমনীয়তা প্রকাশ করেছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক শীর্ষ কূটনীতিক ডেভিড শেনকার এ বিষয়ে এখনি নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে চান না। কারণ তার মতে, আলোচনায় এখনি এমন কোনও মৌলিক পরিবর্তন হয়নি যার ওপর ভিত্তি করে দ্রুত সমাধানের দিকে অগ্রসর হওয়া যাবে।

তবে সব পক্ষের নমনীয়তার কারণে তিনি এই অবরোধ শেষ হওয়ার বিষয়ে বেশ আশাবাদী বলে জানিয়েছেন। ২০১৭ সালে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের জের ধরে কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে সৌদি আরব, বাহরাইন, আরব আমিরাত এবং মিসর।

সে সময় কাতারের সঙ্গে সব ধরনের পরিবহন ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ওই ৪ আরব দেশ। তবে এসব দেশের আনা অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে কাতার।

এদিকে, ওয়াশিংটনভিত্তিক ব্রুকিংস ইন্সটিটিউটের এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে কাতারের অবরোধের বিষয়টি তুলে ধরে শেনকার বলেন, এ বিষয়ে আমি পুরো কূটনৈতিক আলোচনায় যেতে চাই না। তবে এটা বলতে চাই যে, কিছুটা অগ্রগতি রয়েছে। আমার মনে হয় সমস্যা সমাধানে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

দীর্ঘদিন ধরেই কাতারের সঙ্গে আরব দেশগুলোর বৈরী সম্পর্কের অবসান ঘটাতে মধ্যস্ততার চেষ্টা করে আসছে কুয়েত এবং যুক্তরাষ্ট্র। মূলত মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব কমাতেই কাতারের ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। কারণ চার আরব দেশের অবরোধের কারণে কাতার ইরানের দিকে আরও বেশি ঝুঁকে পড়েছে।

শেনকার বলেন, এখনি হয়তো এ বিষয়ে নিশ্চিত সমাধান দেওয়া সম্ভব নয় তবে আমরা এ বিষয়ে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করছি। আমাদের মধ্যে আলোচনার ফলে কিছুটা নমনীয়তা ফিরে এসেছে। তাই আমরা আশা করছি সব পক্ষকে আরও কাছাকাছি আনা সম্ভব হবে এবং এই পরিস্থিতির অবসান ঘটবে।

তিনি বলেন, এই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে ওয়াশিংটন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এই সমস্যা সমাধানে যুক্ত রয়েছেন।