টাঙ্গাইলের সদর থানার রসুলপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত) অনিল কুমার দাস ও তার সহধর্মিণী কল্পনা দাস হত্যা মামলায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, স্বপন কুমার দাস, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. ফরহাদ, মো. মনিরুজ্জামান ভূইয়া, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মো. শয়ান মিয়া।
এ রায়ে মামলার বাদী ও ভিকটিমের ছেলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা মা হত্যার মামলায় আদালত ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। নানা প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও এই মামলায় আসামিরা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পেয়েছে এতে আমি সন্তুষ্ট। আমার বাবা মাকে কোন দিন ফেরত তো পাব না। এ রায়ে যেন তাদের আত্মা শান্তি পায়।
তিনি আরো বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। আর সমাজে যেন এই কোন অপরাধ সংগঠিত না হয়। এই রায়ের মাধ্যমে যেন অন্যরা শিক্ষা নেয়।’
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, আসামি স্বপন কুমার দাস অন্যান্য আসামিদের সাথে পরস্পর যোগসাজসে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা দাসের সম্পত্তি আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা করতে থাকে। স্বপন কুমার দাসের সাথে অন্যান্য আসামিরা অনিল কুমারের সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য তাকে দিয়ে তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার পরিকল্পনা করে। পরে ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই সন্ধ্যার পর আসামিরা অনিল কুমার দাসের বাড়িতে গিয়ে তাকে ও তার স্ত্রীকে হত্যা করে। হত্যার পর তাদের গলায় ১০ টি ইট বস্তায় ভর্তি করে বাড়ির বাথরুমের সেফটি ট্যাংকির মধ্যে ফেলে রাখে। পরে পুলিশ সেখান থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় দুদিন পর ২৮ জুলাই ভিকটিমদের ছেলে নির্মল কুমার দাস টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মামলাটিতে আদালতে অভিযোগ গঠন দাখিল করা হয়। ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত অভিযোগ পত্রে উল্লেখিত ৩৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
আসামিদের মধ্যে জাহিদুল ইসলাম ও মো. ফরহাদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।