মোঃ আঃ হান্নান, ক্রাইম রিপোর্টার সিলেট।।

চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ঊষা সমবায় সমিতি লিঃ সমবায়ের নাম ধরে চালিয়ে যাচ্ছে জমজমাট সুদের ব্যবসা। উপজেলার গাজীপুর আহম্মদাবাদ ও মিরাশী ইউনিয়নে চলছে এ ব্যবসার কার্যক্রম।


তারা সমবায় অফিস থেকে নিবন্ধন গ্রহণ করে সমবায়ের উপ আইনের তোয়াক্কা না করে যার তার সাথে লেনদেন করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ঊষা সমবায় সমিতি লিমিটেড
এর সুদের ব্যবসা পরিচালনা করতে ফিল্ড পর্যায়ে রয়েছেন কাগজপত্রে নিয়োগ বিহীন ৫ জন ফিল্ড অফিসার।
তারা ঊষা সমবায় সমিতি লিঃকে কুমিল্লার একটি এনজিও পরিচয় দিয়ে ডেলি কিস্তি নাম করে ঋণ দিয়ে এলাকার সহজ-সরল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাৎসরিক প্রায় ৬০ পার্সেন্ট সুদ আদায় করে নিচ্ছেন।


সুদের একাংশ ঋণ প্রদানের আগেই তারা কৌশলে গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করে নেন। সমবায় সমিতির সদস্য না বানিয়ে একাধিক ব্ল্যাংক স্টাম্পের মধ্যে স্বাক্ষর নিয়ে ভর্তি বাবদ ১৮৫০ টাকা গ্রহণ করেন।
পাঁচ হাজার থেকে কুড়ি হাজার টাকা ঋণ দিয়ে সাড়ে পনেরো পার্সেন্ট হারে একশ দশ দিনে সেই টাকা কিস্তিতে ফেরত নেন। ৩৬৫ দিনের হিসাবে যে সুদের হার দাঁড়ায় ৬০ পার্সেন্টের উপরে । কোনো ব্যবসায়ী কিস্তি দিতে কোনো একদিন সমস্যায় পড়লে ওই সমিতির মহিলা ফিল্ড অফিসাররা ব্যবসায়ীর দোকানে বসে থাকেন কিস্তি আদায় হলে তারপরে যান। ফিল্ড অফিসারদের বক্তব্য একদিন কিস্তি কম হলে তাদের বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। তাদেরকে চাকরি দেওয়ার আগে তাদের কাছ থেকে ব্লাংক চেক তাদের শিক্ষা সনদের মূল কপি সহ নানান মূল্যবান জিনিস তাদের সংগ্রহে নিয়ে নিয়েছে ঊষা।

ওই সমবায় সমিতির সদস্য সংখ্যা কতজন জানা না গেলেও তাদের ঋণ গ্রহীতা হাজারের উপরে রয়েছে বলে জানা যায়। ফিল্ড অফিসাররা সমিতির সভাপতিকে কুমিল্লার এনজিওর ম্যানেজার বলে পরিচয় দিলেও সমিতির সভাপতি শফিকুল রহমান রনি নিজেকে সমিতির সভাপতি এবং তার ভাই সম্পাদক বলে জানান।


ঊষার ঋণ প্রদান এবং তা আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সদস্যদের সঞ্চয়ের জন্য সমবায়ের রেজিষ্ট্রেশন নিয়েছি। মূলত সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে জেলা পর্যায়ে এ ব্যবসা পরিচালনা করার অনুমোদন রয়েছে। আমাকে একজন পরহেজগার ব্যক্তি টাকা পয়সা দিয়ে সমর্থন দিচ্ছেন। আমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে স্টাম্পের মাধ্যমে তাদেরকে পণ্য কিনে দেই। তারা তাদের লভ্যাংশের অর্ধেক আমাকে দেওয়ার কথা থাকলেও আমি যতসামান্যই নিচ্ছি। রনির এ বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন উপস্থিত দুই গ্রাহক।
এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা এমরানুল হক বলেন, সমবায়ের উপ-আইন মেনে যাবতীয় লেনদেন করতে হয়। এর বাহিরে কোন কিছু করা বৈধ নয়।
সমবায় সমিতির উপ আইনে বলা আছে, সদস্যদেরকে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া যাবে এবং এর লভ্যাংশ কত হবে সেটা সভার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে।
সমবায় সমিতির মাধ্যমে এনজিও কার্যকলাপ বৈধ নয়।
চুনারুঘাট উপজেলা সমবায় অফিস কয়েকবার উনার সমিতির অডিট করতে চাইলে উনি খাতাপত্র দেখায় না।