নগরীর রূপাতলী হাউজিং এলাকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাসে হামলা চালিয়েছেন বাস শ্রমিকরা। এতে ১৪-১৬ জন ছাত্র আহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টা থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা সড়ক অবরোধ করেছেন। ফলে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

বিক্ষোভের সময় বুধবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে থাকা একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, বাস শ্রমিকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে রাত ১টার দিকে নগরীর রূপাতলী হাউজিং এলাকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি ছাত্রাবাসে হামলা চালানো হয়। এতে ১৬ থেকে ২০ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আহত হন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিআরটিসির বাস কাউন্টারের স্টাফদের সঙ্গে ঝামেলা হলেও রাতের হামলায় রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডের শ্রমিকসহ বিভিন্ন লোকজন অংশ নেন। রূপাতলী বাস মালিক সমিতির এক নেতার ইন্ধনে রাতে হাউজিং এলাকার ছাত্রাবাসে হামলা চালানো হয়।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সহকারী প্রক্টর সুপ্রভাত হালদার জানান, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বসার কথা রয়েছে।

কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন।

jagonews24

এর আগে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে নগরীর রূপাতলী বিআরটিসির বাস কাউন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র জিএম তৌফিকুল সজলকে ছুরিকাঘাত করে আহত করা হয়। এসময় তার সঙ্গে থাকা একই শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ফারজানা আক্তারকে লাঞ্ছিত করেন বিআরটিসির বাস কাউন্টারের স্টাফরা।

সজল তার বাড়ি যশোরে যাওয়ার জন্য দুপুর ১টার দিকে রূপাতলী বিআরটিসির বাস কাউন্টারে যান। তাকে বাসে উঠিয়ে দিতে সঙ্গে যান সহপাঠী ফারজানা। খুলনার বাসের টিকিট কেটে সজল ও ফারজানা বিআরটিসির বাস কাউন্টারে অপেক্ষা করছিলেন।

এ সময় কাউন্টারের সামনে ভান্ডারিয়াগামী একটি বিআরটিসি বাস এসে থামে। সজল এসময় লাইনম্যান রফিকের কাছে জিজ্ঞেস করে ওই বাসটি কোথায় যাবে। এতে লাইনম্যান রফিক বিরক্ত হয়ে সজলকে গালি দেন।

এনিয়ে শিক্ষার্থী সজল ও ফারজানার সঙ্গে লাইনম্যান রফিক এবং বিআরটিসির বাস কাউন্টারে থাকা অন্যদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সজলের সঙ্গে লাইনম্যান রফিকের হাতাহাতি শুরু হয়।

এ সময় লাইনম্যান রফিক পাশের ফলের দোকান থেকে ছুরি নিয়ে এসে সজলের থুতনিতে আঘাত করেন। ফারজানা এগিয়ে গেলে তাকেও টানাহেঁচড়া করে লাঞ্ছিত করা হয়।

ওই ঘটনার খবর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে দুপুর ২টা থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা সড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করেন। পরে অভিযুক্ত লাইনম্যান রফিককে পুলিশ আটক করলে বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।