সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার : মুহাম্মদ রকিবুল হাসান , গত ১১/০৭/২০১৯ইং তারিখ, রোজ বৃহস্পতিবার বকেয়া বেতন ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ।বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইস্কাটনে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ আইজিএ প্রকল্প চুক্তি ভিত্তিক ৪৩১ জন মার্চ ২০১৯ থেকে জুলাই ২০১৯ পর্যন্ত বেতন পাননি। এক পর্যায়ে তারা উচ্চআদালতের দ্বারস্থ হন। উচ্চআদালতের রিট নম্বর – ১৪৪৭/১৯*, রিট নম্বর – ৪২৬৯/১৯* এবং রিট নম্বর – ২৬৪/১৯* । এতে আদালত উক্ত প্রকল্পের সকল কর্মচারীদের বেতন, উৎসব ভাতা ও নববর্ষ ভাতা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কে আদেশ জারি করেন। উচ্চআদালতের আদেশ কে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে কোন প্রকার পদক্ষেপ নিচ্ছেন না মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে “উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ শীর্ষক” প্রকল্পের অফিস এটেনডেন্টস্ ও ড্রাইভার পদগুলো আউটসোর্সিং পদ্ধতির পরিবর্তে সর্ব সাকুল্যে বেতন ভিত্তিতে বহাল চান তারা। মানব বন্ধন চলাকালে বিকেলের দিকে মানববন্ধন কর্মীদের প্রতিনিধি শামীম, রিপন সহ ৭/৮ জনের সাথে জরুরি বৈঠক করেন। এক পর্যায়ে, ডিজি ,পরিচালক, প্রকল্প পরিচালক শফিকুজ্জামান প্রতিশ্রুতি দেন যে আমি তোমাদের ব্যাপারটা এক সপ্তাহের মধ্যে সুরাহা করবো, প্রতিশ্রুতি দিলেন কিন্তু আজ ১৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও কোন প্রকার পদক্ষেপ নেননি।

গালফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা:) লিমিটেড রিট নম্বর – ২৬৪/১৯* শুনানি শেষে গত ১৩/০২/২০১৯ইং তারিখ মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণ গালফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা:) লিমিটেড কতৃক চুক্তি ও কার্যাদেশের ভিত্তিতে “আইজিএ” প্রকল্প মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন উপজেলায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সরবরাহকৃত মোট ৪৩১ জন বিভিন্ন শ্রেণীর আউটসোর্সিং জনবলদেরকে গত ১৩/০১/২০১৯ ইং তারিখে মহামান্য উচ্চআদালত রিট নম্বর – ২৬৪/১৯* এর বিপরীতে যে রুল ইস্যু করেছে উক্ত রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরবরাহকৃত গালফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা:) লিমিটেড এর জনবলরা উক্ত পদে স্থিতি আরোপ এবং গত ০৭/০২/২০১৯ইং তারিখে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে গালফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা:) লিমিটেড জনবলদের বেতন, ভাতা, ফি সহ অন্যান্য সুবিধাদি প্রদানের জন্য মাননীয় বিচারপতিগন নির্দেশ প্রদান করেন। প্রকল্প পরিচালক আইজিএ গত মার্চে জনবলদের বেতন,ভাতা, ফি সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পরিশোধ না করায় গত মার্চ মাস থেকে চলমান মাস পর্যন্ত গালফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা:) লিমিটেডের মাননীয় বিজ্ঞ আইনজীবী জনাব ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ (সাবেক আইনমন্ত্রী) ও ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক, সচিব মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মহাপরিচালক মহিলা অধিদপ্তর, প্রকল্প পরিচালক, আইজিএ প্রকল্প, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর বরাবর মহামান্য উচ্চআদালতে ১৩/০২/২০১৯ইং তারিখের আদেশ অনুযায়ী বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি প্রদান করার জন্য নোটিশ প্রদান করেন। উক্ত নোটিশ অনুযায়ী মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মহাপরিচালক মহিলা অধিদপ্তর শফিকুজ্জামান প্রকল্প পরিচালক কে মহামান্য বিচারকগণ আদেশ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন। প্রকল্প পরিচালক শফিকুজ্জামান তার উর্ধ্বতন আদেশ উপেক্ষা করে বেতন, ভাতা, ফি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান না করায় গালফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা:) লিমিটেড কর্তৃক দায়েরকৃত মহামান্য উচ্চআদালতের আদেশ অমান্য করায় রিট নম্বর – ২৬৪/১৯*এ গত ১৩/০২/২০১৯ইং এর যথাযথ বিচার প্রদানকৃত আদেশ অমান্য করায় গালফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা:) লিমিটেড মহামান্য উচ্চআদালতে শফিকুজ্জামান প্রকল্প পরিচালক, উপজেলায় মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রিট দায়ের করেন।

তাহার রিট নম্বর ৪৫৩/১৯* এই কোড্ অবমাননায় রিট দায়ের করলে প্রকল্প পরিচালক শফিকুজ্জামান ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় এর উপজেলা কর্মকর্তাদের কে তার প্রকল্প পরিচালক কার্যালয়ের কর্মরত বাবু,জনি,আসাদ সহ বেশ কয়েকজন কর্তৃক বিভিন্ন ফোনের মাধ্যমে মৌখিকভাবে নির্দেশ প্রদান করছে যে গালফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা:) লিমিটেড এর মাধ্যমে সরবরাহকৃত ও কর্মরত ওদেরকে গত মার্চ মাস থেকে কোন প্রকার হাজিরা প্রদান না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন অন্যথায় চাকরিচ্যূত করা হবে বলে হুমকি প্রদান করে। বেশ কয়েকটি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে হাজিরা প্রত্যয়ন প্রদান করলেও এখনো বেশিরভাগ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কর্মরতদের হাজিরা প্রত্যায়ন দেয়া হচ্ছে না। কর্মরতদের কর্মস্থলে হাজিরা খাতায় এখন আর সই করতে দেয়া হচ্ছে না এবং তাদেরকে কর্মস্থলে না আসার জন্য বলা হচ্ছে। কর্মরতরা অভিযোগ করেন , তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলাটি করায় তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে এসকল পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানান কর্মরত বেশ কয়েকজন। কয়েকজনের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের একান্ত সাক্ষাৎকার ও নেয়া হয়েছে।

এই ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক শফিকুজ্জামান এর কাছে ফোন যোগে জানতে চাইলে সে বিভিন্ন ব্যস্ততা দেখিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। পরে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।