মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আটজন নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা বাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলিতে মিয়াইং শহরে ছয়জন এবং ইয়াঙ্গুনের নর্থ ডাগন জেলায় একজন ও ম্যান্ডালায় এক জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতালে মরদেহ নিয়ে যেতে সহায়তা করা ৩১ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী জানান, তারা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলেন। বিশ্বাসই হচ্ছে না যে তারা (নিরাপত্তা বাহিনী) এমনটা করতে পারে।

তিনি আরো জানান, তাদের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালালে ছয়জন নিহত হয়। তিনি মরদেহ হাসপাতালে নিতে সহায়তা করেছেন বলেও জানান। হাসপাতালের একজন স্বাস্থ্যকর্মীও ছয়জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে ইয়াঙ্গুনের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক ছবিতে দেখা গেছে, এক বিক্ষোভকারী রাস্তায় পড়ে আছেন। তার মাথার ক্ষত থেকে রক্ত বের হচ্ছে। আর একজন মারা গেছেন ম্যান্ডালায়।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে রাস্তায় নেমে আসেন। চিন রাজ্যের তমু শহরে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ র‌্যালি বের করেন। ইয়াঙ্গুনের সানচং জেলায় সমাবেশ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এই জেলার বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে সেখানকার বাসিন্দা নয় এমন ব্যক্তিদের খুঁজছে পুলিশ। এই অভিযানে অন্তত ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। কাউকে লুকিয়ে রাখলে বাসিন্দাদের শাস্তি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।

দেশটির অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারর্স অ্যাডভোকেসি গ্রুপ জানায়, আজ বৃহস্পতিবারের এই হত্যাকাণ্ড ছাড়াও এর আগে আরো ৬০ জন নিহত হয়েছেন। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আটক হয়েছেন দুই হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী।

মিয়ানমারে সামরিক সরকারবিরোধী আন্দোলনে গুলি ও নির্যাতনের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। প্রায় এক মাস থেকে চলা এই আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আসছে দেশটির সেনা সদস্যরা। বাড়ছে নিহত আর গ্রেপ্তারের সংখ্যা। চীন, রাশিয়া, ভারত ও ভিয়েতনামের ভেটোর কারণে সামরিক অভ্যুত্থানকে ক্যু হিসেবে আখ্যা দিতে ব্যর্থ হলেও এই অমানবিক নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানায় নিরাপত্তা পরিষদ।

সূত্র: রয়টার্স।