সুপ্রিম কোর্ট

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে সারা দেশে আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হলেও বিচারক এবং আদালত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ব-স্ব কর্মস্থল ত্যাগ না করতে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশে হাইকোর্ট প্রশাসন নির্দেশনা জারি করেছে।

হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানীর স্বাক্ষরে এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯)-এর প্রাদুর্ভাবজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে এবং অন্য সব অধস্তন আদালত/ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম পরিচালনা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় প্রত্যেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শারীরিক উপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করবেন। ওই সময় অধস্তন আদালতে কর্মরত সব বিচারক এবং আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কর্মস্থল ত্যাগ না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে রবিবার রাতে অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র বিচারপতিদের এক সভায় সারা দেশে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত আদালতে বিচার কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ সময়ে জরুরি বিষয়ে শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে একটি বেঞ্চ এবং হাইকোর্ট বিভাগে মাত্র চারটি বেঞ্চ বসবে। আর প্রত্যেক জেলা ও মহানগরে একটি করে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট খোলা থাকবে। এ সিদ্ধান্ত সোমবার থেকেই কার্যকর হয়েছে। এ কারণে সোমবার দেশের কোনো আদালতে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। শুধু নতুন গ্রেপ্তার করা ব্যক্তি বা আসামিদের বিষয়ে আদেশ দিতে প্রত্যেক জেলায় ও মহানগরে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপিল বিভাগের একজন চেম্বার বিচারপতি মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার বসবেন। আর হাইকোর্ট বিভাগে মঙ্গলবার থেকে তিনটি দ্বৈত বেঞ্চ ও একটি একক বেঞ্চ বসবেন।

আপিল বিভাগে দুটি বেঞ্চ ও হাইকোর্ট বিভাগে ৫২টি বেঞ্চ চালু ছিল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আপিল বিভাগের দুটি বেঞ্চই ভার্চুয়ালি বিচারকাজ পরিচালতি হচ্ছিল। আর হাইকোর্ট বিভাগের অধিকাংশ বেঞ্চেই ভার্চুয়ালি বিচারকাজ চলছিল। এ ছাড়া সারা দেশে সব জেলায় একাধিক আদালতে বিচার কার্যক্রম চালু ছিল। কিন্তু সরকার এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করায় এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আদালত কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। আদালত বন্ধ করার কারণে যেসব মামলায় আসামিকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জামিন দেওয়া হয়েছে বা উচ্চ আদালত থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণের শর্তে জামিন দেওয়া হয়েছে বা অন্য কোনো অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেসব মামলায় জামিন বা অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের কার্যকারিতা আরো দুই সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।