রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে সত্তরের দশক থেকে ঢাকাই সিনেমায় বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের সুপারস্টার ওয়াসিমকে। আজ রবিবার বাদ জোহর তার দাফনকাজ সম্পন্ন হয়।

এর আগে গুলশান আজাদ মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বনানী কবরস্থান সংলগ্ন মসজিদে কাদেরের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে চলচ্চিত্রের সহকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।

গতকাল শনিবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর শাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে বেশ কিছুদিন শয্যাশায়ী ছিলেন এ চিত্রনায়ক। তিনি কিডনি রোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

ফোক-ফ্যান্টাসি ও অ্যাকশন ঘরানার ছবির নায়ক হিসেবে ওয়াসিম ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর কেরিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য ছবি- ‘ডাকু মনসুর’, ‘জিঘাংসা’, ‘কে আসল কে নকল’, ‘বাহাদুর’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘মানসী’, ‘দুই রাজকুমার’, ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’, ‘ইমান’, ‘রাতের পর দিন’, ‘চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা’,’ লাল মেম সাহেব’, ‘জীবন সাথী’, ‘রাজনন্দিনী’, ‘রাজমহল’ এবং ‘বিনি সুতার মালা’।

অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনাও করেছেন ওয়াসিম। তার প্রযোজনাপ্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ডাব্লিউ আর প্রোডাকশন। তার প্রযোজিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে হিসাব চাই, মোহন বাঁশি, নয়া তুফান, সীমাবদ্ধ ইত্যাদি। অভিনেতা হিসেবে তুমুল সাফল্য পেলেও প্রযোজক হিসেবে ওয়াসিম খুব একটা সফল হতে পারেননি।

১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ চাঁদপুরের মতলবে জন্ম ওয়াসিমের। ইতিহাস নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় প্রবেশ করেন। শুধু অভিনয় নয়, বডি বিল্ডিংয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল তাঁর। ১৯৬৪ সালে ‘মিস্টার ইস্ট পাকিস্তান’ খেতাব অর্জন করেছিলেন প্রয়াত এই অভিনেতা।

ব্যক্তিজীবনে ওয়াসিম ছিলেন দুই সন্তানের জনক। ওয়াসিম বিয়ে করেছিলেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী রোজীর ছোট বোনকে। তাদের ছেলে দেওয়ান ফারদিন এবং মেয়ে বুশরা আহমেদ। ২০০০ সালে তার স্ত্রীর অকালমৃত্যু ঘটে। ২০০৬ সালে ওয়াসিমের মেয়ে বুশরা আহমেদ মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে আত্মহত্যা করে। ছেলে ফারদিন লন্ডনের কারডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে সেখানেই স্থায়ী হয়েছেন।