মোঃ আব্দুল হান্নান, ক্রাইম রিপোর্টার, সিলেট

বাপ চাচা যে রাস্তা দিয়ে বের হতেন সেই রাস্তায় বেড়া দিয়ে এক ভাই আটকে দিয়েছে আরেক ভাইয়ের বাড়ির রাস্তা । ১৭ মে (সোমবার) সকালে ঘটনাটি ঘটেছে চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের সুন্দরপুর কাঁঠালবাড়ি গ্রামে। জানা যায় গোপেন্দ্র চন্দ্র নাথ ও সত্যেন্দ্র চন্দ্রনাথ দুই চাচাতো ভাই জন্মের পর থেকে প্রায় ৫০/৬০ বছর যাবত একই রাস্তা দিয়ে বসতবাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। এর আগে সত্যেন্দ্র চন্দ্র নাথের পিতা মৃত সুবল চন্দ্র নাথ ও গোপেন্দ্র চন্দ্র নাথ এর পিতা মৃত গগন চন্দ্র দেবনাথ দুই সহোদর একই রাস্তায় চলাফেরা করতেন।

তাদের মৃত্যুর পর ১৯৯০ সালে দুই চাচাতো ভাই সত্যেন্দ্র চন্দ্রনাথ ও গোপেন্দ্র চন্দ্রনাথ এর মধ্যে রেজিস্ট্রি বাটোয়ারা হয়। সেই বাটোয়ারায়ও ওই রাস্তাটির কথা উল্লেখ করা হয়। বিগত কিছুদিন আগে ওই রাস্তা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ এলাকার মুরুব্বিয়ানরা বিষয়টি সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করে দেন।

আজ সকালে সত্যেন্দ্র চন্দ্র নাথ রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য সত্যেন্দ্র নাথের বিকল্প রাস্তা থাকলেও তার নেই। বিষয়টি গোপেন্দ্র চন্দ্র নাথ এ প্রতিনিধিকে অবগত করলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করা রয়েছে। গোপেন্দ্র চন্দ্র নাথ জানান, দীর্ঘ ৫০/৬০ বছর ধরে উভয় পরিবারের চলাচলের রাস্তা এটি। যা গায়ের জোরে বন্ধ করে দিয়েছেন তার চাচাতো ভাই সত্যেন্দ্র চন্দ্র নাথ। এখন তিনি ও তার পরিবারের লোকজনের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তিনি এর সমাধান চান।

বিষয়টি তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যানকেও অবগত করেছেন। সত্যেন্দ্র চন্দ্র নাথ বলেন, “রাস্তাটি সম্পূর্ণ আমার ভাগের অংশে রয়েছে। ইতিমধ্যে সালিশ বৈঠকে গোপেন্দ্রকে দীর্ঘসময় দিয়ে বিকল্প রাস্তা তৈরি অথবা রাস্তার সম পরিমাণ জমি আমাকে দেওয়ার কথা থাকলেও সে কোনটাই করেনি। আমি দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে আমার জমিতে বেড়া দিয়েছি।”

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ফরিদ মিয়া বলেন, রাস্তাটির ব্যাপারে ইতিমধ্যে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়েছে। মহরি দিয়ে মাপজোকে দেখা গেছে রাস্তার জমিটি সত্যেন্দ্র চন্দ্র নাথের ভাগে। সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে গোপেন্দ্র নাথ সত্যেন্দ্র নাথকে বাড়ির সামনে সমপরিমাণ জমি দিয়ে রাস্তা ব্যবহার করা কিংবা গত চৈত্র মাসের মধ্যে বিকল্প রাস্তা তৈরি করা অথবা উভয়ে মিলে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করার সুপারিশ করা হলে উভয় পক্ষ তা মেনে নেন।

পরে গোপেন্দ্র নাথ এর কিছুই বাস্তবায়ন করেন নি। স্থানীয় চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবেদ হাসনাত চৌধুরী সনজু বলেন, রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কথা গোপেন্দ্র তাকে জানিয়েছেন। তিনি বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করবেন।