সম্প্রতি রাজধানীতে বিয়ে প্রতারণা বেড়ে গেছে আশংকাজনক হারে। এ প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে প্রবাসীসহ অসংখ্য নামিদামী মানুষ দিশেহারা। মামলা হামলা জেল জরিমানাসহ নাজেহাল প্রতারিত ভুক্তভোগীরা। সামাজিক অবস্থান ও মানসম্মানের চিন্তা করে বেশীরভাগ ভুক্তভোগীই বিষয়টি গোপন করে যান। সঙ্ঘবদ্ধ একটি প্রতারক চক্র বিপদগামী কিছু নারীদের ব্যবহার করে এধরনের অপরাধ করে থাকে। কখনো কখনো লোভ লালসার বশবর্তী হয়ে নিকটাত্মীয়রাও মেয়েদের ব্যবহার করে এধরণের ঘৃণ্য অপরাধ করে থাকেন।
এমনই একটি প্রতারণার ফাঁদে পরে দিশেহারা এক সাংবাদিক। প্রতারক নারীর নাম শিলা মনি, পিতা: আব্দুল গনি মৃধা, ঠিকানাঃ ১০ই/৬বি মধুবাগ, মগবাজার ঢাকা। শুধু বিয়ে নয় যেকোনো স্বচ্ছল পুরুষ মানুষের সাথে পরিচয় হলেই নানাভাবে প্রতারণার ফাঁদ পেতে বিভিন্নভাবে অর্থ আদায় করেন শিলা মনি গং । আর পেছনে থেকে তাকে এধরণের অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করেন (৯৯ নং ওয়ার্ড) ফার্মগেট ইন্দিরা রোডের কাজী আবুবকর সিদ্দিক ও শিলার মামা মোস্তাফিজুর রহমান নিজেই। শিলার প্রতারণার শিকার খুলনার যুবক সবুজ সহ একাধিক ভুক্তভোগী এমন তথ্য প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পটুয়াখালীর এক তরুন জানায়, শিলার সাথে ফেজবুকে পরিচয় হয় তার সাথে, এরপর কয়েকদিনের কথা বার্তায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে, এরপর শীলার বিভিন্ন আবদার মিটাতে গিয়ে দু মাসে কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়, এরপর ওই তরুন প্রতারনার বিষয়টি বুঝতে পেরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলে তাকে নানাভাবে হুমকি ও ব্লাকমেইল করতে থাকে। মানসম্মানের ভয়ে নীরবে সহ্য করতে থাকে সে । এরপর ফেব্রুয়ারীর ৫ তারিখে পটুয়াখালীসদর থানায় সাধারন ডায়েরী করে । শিলা সম্প্রতি রাজধানীতে এক সাংবাদিক এর ব্যবসায়ীক অফিসে চাকরি নেন।
চাকরিতে জয়েন্ট করেই তার লোলুপ দৃষ্টি পড়ে সদ্য বিচ্ছেদ হওয়া উক্ত সাংবাদিক এর প্রতি। শুরু হয় শিলার নানা কুটকৌশল। গত ১৭ মার্চ ২১ইং তারিখে শিলা ও তার সহযোগীদের পুর্বপরিকল্পিত পাতানো দাওয়াতে শিলাদের উক্ত মধুবাগ, মগবাজারের বাসায় যান সাংবাদিক ও তার কয়েকজন সহকর্মী। দুপুরের খাবার শেষে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজী আবুবকর সিদ্দিক এর সহযোগী কাজী ফিরোজ ও শিলার মামা মোস্তাফিজুর রহমান শিলার সাথে সাংবাদিকের বিয়ের আয়োজন শুরু করেন। এসময় সাংবাদিক ও উপস্থিত তার সহকর্মীরা সবাই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান।
একপর্যায়ে সাংবাদিক তার স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের নূন্যতম সময় অতিক্রম হয়নি মর্মে সময় চান। এসময় কাজী ফিরোজ ও মোস্তাফিজুর রহমান বিয়ের রেজিস্ট্রি বইয়ের পাতা ফাঁকা রেখে একপর্যায়ে জোরপূর্বক বিয়ের ব্যবস্থা করেন। একপর্যায়ে শিলার পাতানো প্রতারণার ফাঁদে পা দেন সাংবাদিক। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথেই কোনরকম সহকর্মীদের নিয়ে ফিরে আসেন তিনি। পরের দিন থেকেই শুরু হয় শিলার নানা রকম হয়রানি। ৫ লাখ টাকার জন্য চাপ দেয় শিলা, টাকা না দিলে মামলার ভয়ভীতি সহ নানারকম হয়রানির হুমকি দিতে থাকে শিলা ও তার মামা মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথমে মান সম্মানের ভয়ে বিষয়টি চেপে যান সাংবাদিক। কিন্তু শিলাকে তার দাবীকৃত টাকা দিতে দেরী হওয়ায় শিলা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে অপপ্রচার করতে থাকে।
এদিকে সাংবাদিক যখন বুঝতে পারেন তিনি শিলা গং প্রতারকচক্রের পাতানো ফাঁদে পা দিয়েছেন তখনই হাতিরঝিল থানায় ১লা এপ্রিল ২০২১ তারিখে একটি সাধারন ডায়েরি (জিডি নং:৪০) করেন যার নাম্বার ৪০। অপরদিকে কাজী ফিরোজ এর কাছে বিয়ের কাবিন নামা চাইলে তিনি আসল কাজী আবুবকর সিদ্দিক গ্রামের বাড়িতে আছেন মর্মে কালক্ষেপন করেন। একপর্যায়ে কাজী আবুবকর সিদ্দিক ঢাকায় আসলে সাংবাদিক তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তখন কাজী ফিরোজ গ্রামের বাড়িতে আছেন মর্মে কালক্ষেপন করেন। সাংবাদিক বুঝতে পারেন পুরো বিষয়টি পরিকল্পিত।
প্রায় দেড় মাস নানা টালবাহানা করে, একপর্যায়ে কাজী আবুবকর সিদ্দিক কাবিননামা দেন, তবে বিয়ের তারিখ ১৭মার্চ ২১ইং এর পরিবর্তে ০২ এপ্রিল ২১ইং উল্লেখ করেন। এছাড়াও কাবিননামা উঠাতে কাজী আবুবকর সিদ্দিক ২০০০ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। কাবিননামা প্রসঙ্গে কাজীর কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন আমি পরিস্থিতির শিকার। এছাড়াও প্রতারক শিলা মনি ঢাকার এক নারী নেত্রীর ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে পোষ্ট করায়, উক্ত নারী তার বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় ২১ এপ্রিল ২০২১ তারিখে একটি সাধারন ডায়েরি করেন যার নাম্বার ১৩২১ ।