মোঃ আব্দুল হান্নান, ক্রাইম রিপোর্টার, সিলেট

চুনারুঘাট উপজেলার চিমটিবিল ক্যাম্পের বিজিবি কর্তৃক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে উপজেলার আমু চা বাগানবাসী। ৩১ (সোমবার) মে সকাল ৮থেকে ১০ পর্যন্ত বাগানের কল ঘরের সামনে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত বছর থেকে বিজিবি নির্দোষ চা শ্রমিকদের মাদক মামলার পলাতক আসামি করে হয়রানি করে আসছে।

গত ২৭ বৃহস্পতিবার আমু চা বাগানের সমরা মুন্ডার পুত্র সুমন মুন্ডাকে মাদক সহ গ্রেফতার দেখিয়ে একই বাগানের মৃতঃ পুলেন শুক্লবৈদ্যের পুত্র সবুজ শুক্লবৈদ্য, মৃতঃ অবনি শুক্লবৈদ্যের পুত্র কান্তা শুক্লবৈদ্য ও মৃতঃ লখিন্দর শুক্লবৈদ্যের পুত্র ফুলকুমার শুক্লবৈদ্য সহ বস্তির আরো দুজনকে পলাতক আসামি করে মামলা দায়ের করে। যা মিথ্যা। ওই তিন জন ওই ঘটনায় জড়িত না। ঘটনার উল্লেখিত সময়ে ৩জন আলাদা আলাদা স্থানে ছিল। ফুলকুমার তার মায়ের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত ছিল।

জেলা কিংবা জেলার বাহিরের যেকোনো লোক মাদক নিয়ে ধরা পড়লেই বিজিবি এলাকার চা শ্রমিকদের মামলার পলাতক আসামি করে ফেলে। তারা এর থেকে পরিত্রাণ চান। নির্দোষ নিরপরাধ শ্রমিকদের মামলা দিয়ে হয়রানি করলে তারা আরো বড় পরিসরে আন্দোলন করবেন। অপরাধীদের ব্যাপারে তারা বিজিবি সহ যেকোনো বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন। তারা বলেন যখন থেকে খাসের শিপন ও তার বাবা মামদ আলী বিজিবির সাথে এক হয়েছে তখন থেকেই বাগানের নির্দোষ ব্যক্তিরা বিজিবি কর্তৃক বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে।

এ আগে বিজিবির কোনো কাজে তাদের অসন্তোষ হতে হয় নি। শিপনকে চাঁদা বা তার মালামাল বহন করতে অসম্মতি জানালেই সে মাদক মামলার পলাতক আসামি হয়ে যায়। বিজিবির দাপট দেখিয়ে তারা বহু শ্রমিকের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছে। বিজিবির পোশাক পরে সে নিরীহ শ্রমিকদের মারধরও করেছে। শ্রমিকদের চা বাগানেই বাড়িঘর। তারা বাগানে গরু-বাচুর চড়ানো, লাকড়ি সংগ্রহ, ঘাস কাটা ইত্যাদি করে থাকেন। এসব কাজ করার সময় তাদের ধরে নিয়ে তাদেরকে মামলায় দেওয়া হয়েছে । তারা বলেন, যে শিপন ও তার বাবা দুবছর আগেও ভাতের অভাবে ছিলেন এত অল্প সময়ে তারা কিভাবে কোটিপতি হয়ে গেলেন তা তদন্ত করলে বের হবে শিপনরা কেমন মানুষ।

একজন মাদক ব্যবসায়ীকে সোর্স বানিয়ে নিরীহ শ্রমিকদের হয়রানি ঠিক না। ভবিষ্যতে তারা শিপনকে বিজিবির পোশাকে কিংবা সোর্স হিসাবে দেখতে চান না। তারা বিজিবিকে ভালো ভাবে যাচাই-বাছাই করে মামলা দায়ের করার অনুরোধ জানান।

হাজার শ্রমিকদের অংশ গ্রহনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, চা শ্রমিক নেতা ও ইউপি মেম্বার চন্দ্র তাতী, চা শ্রমিক নেতা ও সাবেক মেম্বার যুবরাজ ঝরা, চা শ্রমিক নেতা ও সাবেক মেম্বার সুদামা বর্মা, চা শ্রমিক নেত্রী ও মহিলা মেম্বার বিজলা কানু, পঁঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ধনেশ্বর ভুনার্জী, সাধারণ সম্পাদক মহেশ্বর উরাং, অর্থ সম্পাদক হলেন মহালী। নিজেদের হয়রানির শিকার অভিযোগ করে বক্তব্য রাখেন, অসিদ মুন্ডা, ফুল কুমার শুক্লবৈদ্য, টুটুল মালি, সবুজ শুক্লবৈদ্য প্রমূখ।