মাসুদ রানাঃ

২৬ জুলাই ২১ ইং ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী থানাধীন কাঠগোলা এলাকা হতে বিজ্ঞ আদালত হতে মামলা প্রাপ্তির মাত্র ০৭ (সাত) দিনের মধ্যে শিশু ফারিয়া জান্নাত’কে উদ্ধার করে পিবিআই, ময়মনসিংহ। শিশু ফারিয়া জান্নাত (৭ মাস)কে গত ১ম মার্চ ২১ ইং তারিখে তার নানা বাড়ী গৌরীপুর থানাধীন বীর আহম্মদপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করে। অত্র মামলার বাদী আব্দুল আলী গত ১ আগস্ট ২১ ইং সকাল ১০ টা।তার মেয়ে ফারিয়া জান্নাত ও স্ত্রী কুলসুমাকে তার শশুর বাড়ী হতে নিজ বাড়ীতে আনার জন্য যান। সেখানে গিয়ে তার মেয়েকে না পেয়ে বাদী তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলে বাদীর স্ত্রী তাকে জানায়, তাদের মেয়ে ফারিয়া জান্নাত অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য তাকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছে। বাদী তার সন্তান ফারিয়া জান্নাতকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (ট্রাইব্যুনাল) আদালতে একটা মামলা দায়ের করেন ।

পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার,এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ দেলোয়ার হোসাইন মামলাটি তদন্ত করেন। পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস এর দিক নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত শিশুটির অবস্থান সনাক্ত পূর্বক অদ্য ২৬/০৯/২০২১ খ্রিঃ সকাল অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী থানাধীন কাঠগোলা এলাকা হতে শিশুটি’কে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলার পিবিআই এর এসপি গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২১ ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই ময়মনসিংহ জেলাকে প্রদান করা হলে পিবিআই কর্তৃক উক্ত শিশু’কে উদ্ধারের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। একপর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শিশুটি’কে ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী থানাধীন জনৈক মোঃ স্বপন মিয়া নিকট হতে উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, অত্র মামলার বাদী আব্দুল আলী গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ ইং খ্রিঃ ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক রেজিষ্ট্রি কাবিনমূলে অত্র মামলার ২নং বিবাদী মোছাঃ কুলসুমা বেগমকে বিবাহ করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে চার সন্তান বিবাহের পর দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারটির মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তারা আলাদাভাবে বসবাস করতে শুরু করে। এছাড়াও তাদের ৪র্থ সন্তান ফারিয়া জান্নাত জন্মগ্রহণ করার পর তাদের ৩য় পুত্র তায়িব খেলার ছলে বিভিন্ন সময় শিশু ফারিয়া জান্নাতকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরাসহ মাঝে মধ্যে মুখ ও গলায় চাপ দিত।

এদিকে সংসারে আর্থিক অনটন থাকায় বাদীর স্ত্রী কুলসুমা বেগম বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে কাজ নেয়। বাদীর স্ত্রী অধিকাংশ সময় বাড়ীতে না থাকার কারনে তার মধ্যে ফারিয়া জান্নাতের নিরাপত্তা নিয়ে এক ধরণের অজানা আশংকা কাজ করত। এ কারণে তিনি সন্তানের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তার সন্তানকে তার পরিচিত জনৈক মোঃ স্বপন মিয়া’কে দিয়ে দেন।

উক্ত ঘটনার বিষয়টি বাদীর স্ত্রী বাদী আব্দুল আলীকে অবগত না করায় বাদী তার স্ত্রীসহ তার শশুর ও শ্যালক এর বিরুদ্ধে অত্র মামলাটি দায়ের করেছিলেন। উদ্ধারকৃত ৭ মাসের শিশু ফারিয়া জান্নাত’কে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে।