মারুফ আহমেদ, কুমিল্লা

কুমিল্লার দেবীদ্বারে মহান বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বিধি বহির্ভূত ও উপজেলা চেয়ারম্যানের আপত্তির পরও এমপির বদলে পিতাকে প্রধান অতিথি করায় এলাকায় সমালোচনার ঝড়, ঘটনাটি কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার উপজেলার। উপজেলা প্রসাশনের আয়োজনে,
গত ১৬ ডিসেম্বর শুক্রবার মহান বিজয় দিবস উদযাপন কালে এ সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।

সূত্র জানায়, দেবীদ্বারে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেইজি চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এবিএম গোলাম মোস্তফা স্টেডিয়ামে আয়োজিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও শরীর চর্চা প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল কুমিল্লা-৪ দেবীদ্বার নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। বিশেষ অতিথি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ।
স্থানীয় সাংসদ রাজী মোহাম্মদ ফখরুল সড়ক দূর্ঘটনায় আঘাতজনিত কারনে চিকিৎসা নিতে থাইল্যান্ডে অবস্থান করায় তার অনুপস্থিতিতে সাংসদ রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের পিতা সাবেক উপ-মন্ত্রী, এমপি এএফএম ফখরুল মূন্সীকে প্রধান অতিথি হিসেবে ঘোষণা করেন ইউএনও। ওই ঘোষণার আপত্তি জানান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। নিয়মে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচীতে এমপির অনুপস্থিতিতে উপজেলা চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলে চেয়ারম্যানই হবেন প্রধান অতিথি।

দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, বিষয়টি নিয়ে আমার ইউএনও’র মধ্যে বাকযুদ্ধ হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টায় অনুষ্ঠানের মাঝ পথে এসে কে হবেন প্রধান অতিথি এ নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে আমি নিয়ম বহির্ভূত এ অনুষ্ঠান বন্ধের দাবী করি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকা অবস্থায় জনগনের প্রতিনিধি নয় এমন কাউকে প্রধান অতিথি করার সুযোগ নেই। এখানে এমপির অনুপস্থিতিতে এমপির বাবা প্রধান অতিথি হতে পারেন না। এটা নিয়ম বহির্ভূত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জবাবে বলেন, তিনি সাবেক উপমন্ত্রী এবং এমপি সে হিসেবে তিনিই হবেন প্রধান অতিথি। উপজেলা চেয়ারম্যান আপত্তি জানানোর পরও এএফএম ফখরুল ইসলাম মূন্সীকে প্রধান অতিথি করেই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। পরে অবশ্য ফখরুল ইসলাম মুন্সি পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে চলে যান।

অনুষ্ঠানে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব রোশন আলী মাষ্টার, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাশেম ওমানী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট নাজমা বেগম, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর, উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি সফিউদ্দিন সফি, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য শিরিন সুলতানা ও বাবুল হোসেন রাজুসহ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাগন, স্থানীয় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ।

এ ব্যাপারে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেইজি চক্রবর্ত্তী একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিউদ্দিন শফি বলেন-বিজয় দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এমপির অনুপস্থিতিতে এমপির বাবাকে প্রধান অতিথি করে ইউএনও নিয়ম বহির্ভূত কাজ করেছেন, যার কারণে জনগণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, এই বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।