রাজধানীর মালিবাগ ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেল চালক মিলনকে হত্যা করে তার মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে আসামি নুর উদ্দিন সুমন।

এর আগে আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মাদ নুরুল ইসলাম সুমন। পরে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ আসামির জবানবন্দী রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ঢাকার শাহজাহানপুর থেকে সোমবার প্রথম প্রহরে গ্রেপ্তার সুমনকে (৩৮) বিকালে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম আদালতকে জানান, আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত।

সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ ১৬৪ ধারায় আসামি সুমনের জবানবন্দি নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ২৬ আগস্ট মালিবাগ ফ্লাইওভারে ছুরিকাঘাতের শিকার হন পাঠাও চালক মিলন। তবে ওই সময় তিনি রাইড শেয়ারিং অ্যাপের পরিবর্তে ভাড়ায় যাত্রী বহন করছিলেন।

ছিনতাইকারী তার গলায় ছুরিকাঘাত করে মোটর সাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে গেলে জখম গলা চেপে ফ্লাইওভারের শান্তিনগর অংশে নেমে আসেন মিলন। এরপর পুলিশের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।

এই ঘটনায় মিলনের স্ত্রী শিল্পি বেগম শাহজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সুমনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

সুমন পুলিশকে বলেছেন, রাত আনুমানিক ৩টার দিকে মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারে উঠতে আবুল হোটেলের ঢালে সুমনের মোটর সাইকেলটি থামান তিনি। গুলিস্তান যাওয়ার কথা বলে ৫০ টাকা ভাড়া ঠিক করেন।

ফ্লাইওভারের সবচেয়ে উপরের সড়কে পৌঁছালে মোটর সাইকেল থামাতে বলেন সুমন। তিনি তখন মোটর সাইকেল নিজেই চালাতে চাইলে মিলন তাতে বাধা দেন। তা নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।

সুযোগ বুঝে সুমন তার সঙ্গে থাকা অ্যান্টিকাটার দিয়ে মিলনের গলায় উপর্যুপরি আঘাত করে তাকে জখম অবস্থায় ফ্লাইওভারে রেখে মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে চলে যান।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেনও সুমনকে গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে একই বিবরণ পাওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।

বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মোটর সাইকেল, হেলমেট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

সুমনের বিরুদ্ধে মতিঝিলে একটি ছিনতাই ঘটনার সম্পৃক্ততার তথ্য ইতোমধ্যে পেয়েছে পুলিশ। আরও কোনো অভিযোগ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।