দেশে নির্বাচিত সরকার নেই বলে সর্বস্তরের দুর্নীতি মহামারী আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এই অভিযোগ করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ’র (এইবি) উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।
মওদুদ বলেন, ‘সরকারি অথবা আধা সরকারি যেকোনো সংস্থায়-এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়েও চাকরির জন্য টাকা দিতে হয়। একজন পিয়নের জন্য তিন লাখ টাকা, একজন নার্সের পাঁচ লাখ টাকা এমনকি টিআইবির যে রিপোর্ট বেরিয়েছে শুনলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার নিয়োগের জন্য ব্রাউন ইনভেলাপ অর্থাৎ টাকার খাম লাগে। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে নির্ধারণ হয়ে থাকে। অর্থাৎ এমন কোনো জায়গা নাই যেখানে বাণিজ্য নাই, ঘুষ ও অন্যায় অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা নাই। দেশে নির্বাচিত সরকার নাই বলে দেশের সর্বস্তরে আজ দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। ’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, আমাদের দৈনিক নাকি ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। এসব কাদের টাকা? জনগণের টাকা। কারা এটা ভোগ করছেন যারা এসব লুট করছেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন, ব্ল্যাক মার্কিটিং, অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছেন তাদেরই টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে আইন লঙ্ঘন করে।’
ছাত্রলীগ-যুবলীগের প্রসঙ্গ টেনে মওদুদ বলেন, ‘আজকে যুবলীগ-ছাত্রলীগ গত ১০ বছর বাংলাদেশের মানুষের ওপর যে নির্যাতন করেছে, চাঁদাবাজি করেছে, টেন্ডারবাজি করেছেন, আজকে তাদের মুখোশ খুলে গেছে। আজকে বিরোধী দল নাই। তবে এমন অবস্থা হয়েছে, সরকার বাধ্য হয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাককে অপসারণ করতে বাধ্য হয়েছে। কেন? টাকার জন্য, ঘুষের জন্য, দুর্নীতির জন্য। একটা তালিকা তারা বের করেছেন যে, ৫০০ ছাত্রলীগের কর্মী-নেতা চাঁদাবাজি করে, চাঁদাবাজির একটা তালিকা বের করেছে-এটা ৫‘শ না ৫ হাজার হবে অথবা তার চাইতেও বেশি হবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি আইনি প্রক্রিয়া হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় তার মুক্তির জন্য চেষ্টা করছি, করে যাব। কিন্তু এর মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। তার মুক্তি হবে রাজপথে। যদি রাজপথে আন্দোলন করতে পারি তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে এবং সেইদিনের অপেক্ষা আমাদের থাকতে হবে, আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। সময়ের অপেক্ষা করে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি যখন দেওয়া হবে তখন সারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদেরকে সেই আন্দোলন সফল করতে হবে এবং বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।’
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া,কাদের গনি চৌধুরী, শামীমুর রহমান শামীম, ড্যাবের আবদুস সালাম, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ।