একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নবীগঞ্জ উপজলোর করগাঁও ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। এই এলাকায় শাখা বরাক নদীর ওপর একটি সেতু না থাকায় এ দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে জনসাধারণকে। বর্ষায় নৌকা এবং হেমন্তে বাঁশের সাকো নিয়েই যেন তাদের জীবন আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে গিয়ে পথচারীরা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
নবীগঞ্জ উপজেলার একটি অবহেলিত জনপদের নাম করগাঁও ইউনিয়নের ছোট সাকোয়া এলাকা। গ্রামের মাঝখানে রয়েছে একটি প্রাইমারি স্কুল, একটি মাদরাসা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়িসহ ৮টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার লোকের বসবাস। মাঝখানে শাখা বরাক নদী থাকায় দুপারের মানুষের যাতায়েতে দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ। এদিকে নদীর ওপারে রয়েছে স্থানীয় টুকের বাজার, সন্নিকটে ইউপি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউপি অফিস এবং আঞ্জব আলী উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিদিন শত শত স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের নদী পার হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। এ ছাড়া ও স্থানীয় নারী-পুরুষ চিকিৎসা, ইউনিয়ন পরিষদে জরুরি কাজর্কমসহ ব্যবসা, বাণিজ্য ও হাটবাজার করতে স্থানীয় বাজার, এমনকি নবীগঞ্জ সদরে যেতে হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জন্য ওই নদীর ওপরে নেই কোনো সেতু। এ জন্য অবহেলিত এই জনপদের মানুষের দুঃখের শেষ নেই। তাদের দুঃখ, দুর্দশা দেখে মনে হয় তারা স্বাধীন বাংলাদেশের বাইরে কোনো দ্বীপে বসবাস করছেন। কেউ মারা গেলেও তাকে কবরস্থানে নিয়ে দাফন করতে গেলেও পড়তে হয় নানা সমস্যায়।
এলাকার বাসিন্দা ছোট সাকোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রুবেল মিয়া জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ এ অঞ্চলের মানুষ স্থানীয় ইউপি পরিষদসংলগ্ন স্থানে সেতু নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়ে আসলেও শুধু আশার বাণীই শুনছেন। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। স্কুলের কোমনলমতি শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার করে স্কুলে আসা-যাওয়া করে।
করগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান ছাইমউদ্দিন বলেন, গ্রামের ছেলে-মেয়েদের বিয়ের অনুষ্ঠানেও নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। মুমূর্ষু রোগী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছা সম্ভব না হওয়ায় ভোগান্তির শিকার হতে হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক যোগাযোগ করেছি; আশা করছি বর্তমান সরকার উন্নয়নধারা অব্যাহত রাখতে এবং জনগণের দুভোর্গ লাঘব করতে দ্রুত একটি ব্রিজ তৈরি করবেন।
হবিগঞ্জ ১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের এমপি গাজী মো. শাহনওয়াজ মিলাদ বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ করতে হলে প্রায় কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রস্তাবটি প্রক্রিয়াধীন।