বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পলাতক আসামি মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।

বুয়েট থেকে বহিষ্কার হওয়া মোর্শেদ রবিবার (১২ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। তবে আদালত তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় পলাতক চার আসামি মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও মোস্তবা রাফিদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেয় আদালত।

গত ৫ জানুয়ারি আদালত চারজন পলাতক আসামিদের হাজির হওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রকাশে পুলিশকে আদেশ দিয়ে বলেছিল, ১৩ জানুয়ারির মধ্যে তারা হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হবে।

১৮ নভেম্বর ওই চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। গ্রেফতার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়।

১৩ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহার নামীয় ১৯ জন এবং এজাহার বহির্ভূত ছয়জন।

এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন ও এজাহার বহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আটজন।

গ্রেফতার আসামিরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শের-ই-বাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরদিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

তিনি শের-ই-বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। ওই ঘটনায় নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।