বিমান ভূপাতিতের ঘটনায় যারা দায়ী ও যারা সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছিল, সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা। সেসময় তারা, ‘মিথ্যাবাদীরা নিপাত যাক’ স্লোগান দেন

ইউক্রেইনীয় যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করার কথা প্রথমে অস্বীকার করায় রাজধানী তেহরানের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কয়েকশত ক্ষুব্ধ ইরানি। এসময় দেশটির কর্মকর্তাদের “মিথ্যাবাদী” বলেও অভিহিত করেছেন তারা।

বিবিসি জানায়, প্রতিবাদকারীরা অন্তত দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়, সেখানে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। 

গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) ভোরে তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের ছয় মিনিট পর ইউক্রেইন এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজাটি বিধ্বস্ত হয়। এতে আরোহী ১৭৬ জনের সবাই নিহত হন।

প্রথমে যান্ত্রিক সমস্যার কারণে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে দাবি করে ইরান। তবে বিমানটি ইরানের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র। তখন ইরানের কর্মকর্তারা তা “ডাহা মিথ্যা” বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, যান্ত্রিক ত্রুটিতেই দুর্ঘটনায় পড়ে ওই বিমান।

এর তিনদিন পর শনিবার “ভুল করে” উড়োজাহাজটি ভূপাতিতের কথা স্বীকার করে “গভীরদুঃখ” প্রকাশ করে ইরানি কর্তৃপক্ষ।

এরপর প্রথমে বিমানে নিহত যাত্রীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তেহরানের অন্তত দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, শরীফ ও আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা এক পর্যায়ে প্রতিবাদ শুরু করে। শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় প্রতিবাদ বিক্ষোভে রূপ নেয়।

ইরানের আধা-স্বায়ত্তশাসিত বার্তা সংস্থা ফারস এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রায় হাজারখানেক মানুষ নেতাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে মার্কিন হামলায় নিহত সামরিক কমান্ডার সোলাইমানির ছবি ছিঁড়ে ফেলে।

বিমান ভূপাতিতের ঘটনায় যারা দায়ী ও যারা সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছিল, সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি তোলেন বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা।

তারা “কমান্ডার ইন চিফের পদত্যাগ চাই”, “মিথ্যাবাদীরা নিপাত যাক” ইত্যাদি স্লোগান দেন।

অন্যদিকে, এক টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প “অনুপ্রেরণাদায়ী” প্রতিবাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। 

টুইটে তিনি বলেন, “ইরান সরকারের অবশ্যই উচিৎ মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে দেওয়া। একইসাথে চলমান আন্দোলনের খবরও সেখান থেকে সরবরাহ করতে দিতে হবে। একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যেন কোনভাবেই কোনও সংঘর্ষ না ঘটে। ইন্টারনেটও বন্ধ করা যাবে না। সমগ্র বিশ্ব দেখছে।”