মোঃ রোমান- ফরিদপুর প্রতিনিধি
পদ্মা সেতুর সব পিলারের (পিয়ার) কাজ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সেতুর শেষ পিলারের (পি-২৬) ঢালাই করা হয়। রাত ১০টার দিকে ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়। মহামারি আকারে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে দেশি-বিদেশি কর্মীদের একটি বড় অংশ ছুটিতে থাকলেও চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। করোনা আতঙ্কের মধ্যেই শেষ হয়েছে ৪২টি পিলারের সবকটির কাজ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক দেওয়ান আবদুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল পদ্মা সেতুতে মোট পিলারের সংখ্যা ৪২। সেতুর মাওয়া প্রান্তের উড়াল অংশে (ভায়াডাক্ট) পিলারের সংখ্যা ৪৪। জাজিরা প্রান্তের ভায়াডাক্টে পিয়ারের সংখ্যা ৪৭টি। ভায়াডাক্টের ৯১টি পিলারের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার শেষ হয়েছে মূল সেতুর সর্বশেষ পিলারের কাজ। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আগামী ৩০ এপ্রিল এ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
২০০১ সালে জুলাইয়ে পদ্মা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেতু নির্মাণের কাজ থমকে যায়। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে টানাপোড়েনের পর ২০১৩ সালে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মূল সেতুর কাজ শুরু হয়।
গত চার বছর তিন মাসে সেতুর ৮৬ দশমিক ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নকশা জটিলতায় প্রায় আড়াই বছর পিছিয়ে ২০২১ সালে জুনে সেতুর কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, মূল সেতুর ১৪টি পিলারের নির্মাণে নির্ধারিত স্থানে পানির তলদেশে মাটির স্তর দুর্বল। এ কারণে নকশা পরিবর্তন করে এসব পিলারে একটি করে বাড়িয়ে সাতটি পাইল বসানো হয়। বাকি পিলারগুলোতে পাইলের সংখ্যা ছয়টি। নকশা জটিলতায় পড়েছিল ৬,৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৫ নম্বর পিলার। মঙ্গলবার ২৬ নম্বর পিলারের ঢালাইয়ের মাধ্যমে সব পিয়ারের কাজ শেষ হয়।
২০০৮ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত মূল সেতুর ৪১টি স্প্যানের ৩৯টি চীন থেকে বাংলাদেশে এসেছে। ২৭টি ইতিমধ্যে সেতুতে পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। সেতু দৃশ্যমান হয়েছে চার দশমিক শূন্য ৫ কিলোমিটার।
দেওয়ান আবদুল কাদের জানিয়েছেন, এপ্রিল মাসে আরও দু’টি স্প্যান বসবে। আরো ১০টি স্প্যান প্রস্তুত করা হচ্ছে।
তথ্য ও ছবি সংগৃহীত