রোমান মাতুব্বর: ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার “কাজী শামসুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়” এর প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগের তথ্য সংগ্রহকালে তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দূর্ণীতি সংক্রান্ত সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় সংবাদকর্মী আক্তারুজ্জামান সোহেল বারী ও লিয়াকত হোসেনকে গালিগালাজসহ খারাপ আচরণ করেন প্রধাণ শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্ত।

প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের অসৌজন্যমূলক আচরণের একটি ভিডিও মুহুর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলাব্যাপী বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় বৈছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, প্রধাণ শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের কক্ষে প্রবেশের পর তাঁর বিরুদ্ধে কিছু অনিয়ম ও দূর্ণীতির তথ্যের বিষয়ে জানতে চায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা। এসময় সংবাদকর্মীরা কিছু বুঝে উঠার আগেই তাদের উপরে চড়াও হন প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্ত। তখন প্রধাণ শিক্ষক সংবাদকর্মীদের উদ্ধ্যেশ্যে অস্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে রুম থেকে বের হওয়ার জন্য হুমকি প্রাদান করেন।

এতে সংবাদকর্মী প্রধান শিক্ষককে বলতে দেখা যায়- আপনি একজন প্রধান শিক্ষক, আপনার ভাষা এমন হওয়া উচিৎ নয়! ভদ্রভাষায় কথা বলুন। এসময় প্রধান শিক্ষকের রুমে থাকা অন্নান্য শিক্ষকরা কয়েকজন সংবাদকর্মীদের ওই রুম থেকে বাইরে টেনে নিয়ে আসে।

এক পর্যায়ে, সংবাদকর্মীরা বিষয়টির ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ জানাতে চাইলে উল্টো ওই বিদ্যালয়ের মধ্যে বহিরাগত অজ্ঞাত কিছু লোকজন সংবাদকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায় এবং তাদেরকে ধাওয়া করেন।

পরবর্তিতে সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে এ বিষয়ে অভিযোগ জানায়।

এ ঘটনায় সোহেল বারী বলেন, প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে মোটা অংকের উপঢৌকনের বিনিময়ে সম্প্রতী ওই বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের অভিযোগ পাই। এছাড়াও ওই বিদ্যালয়ে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়ে অনিয়ম ও দূর্ণীতির তথ্য পাই। সেই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহকালে তাঁর বক্তব্য চাইতে গেলে তিনি আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং আমাদের উপর হামলা চালায়।এ ঘটনায় একটি ন্যায় বিচারের দাবি করেন স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।

যুগান্তর ও যমুনা টিভির ভাঙ্গা উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল মান্নান বলেন, প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্ত একজন বদ মেজাজের মানুষ। এর আগে অরুণ চন্দ্র দত্তের সঙ্গে তাঁর বিদ্যালয়ের বিষয়ে একটি তথ্য জানতে চাইলে তিনি আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছিলেন। স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণের বিষয়ে তিনি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সংবাদকর্মীদের সঙ্গে গালাগাল করার ভিডিও’র বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি নন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট বিস্তারিত তিনি জানাবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম কুদরত-এ-খুদা জানান, বিষয়টির তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন ভাঙ্গা উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ।