সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার করোনা ভাইরাসের এই মহাদূর্যোগময় মুহুর্তে কেউ না খেয়ে থাকবে না। ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দেয়া হবে। আপানারা ঘরে থাকুন। নিজে বাচুন, পরিবার, সমাজ ও দেশ বাঁচান। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশ বাস্তবায়নে ময়মনসিংহ পুলিশ কাজ করছে। জেলা পুলিশ নিজেদের অর্থায়নে সমাজের নিম্নবিত্ত, শ্রমজীবি কর্মহীন, বেকার হয়ে পড়া, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের সহায়তা করে আসছেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের এমন একজন ময়মনসিংহ বিভাগীয় নগরীর বলাশপুর থেকে এসপি আহমার উজ্জামানকে ফোন করে তার অসাহায়ত্বের কথা জানান। মহত, মানবিক এসপি রাতেই মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) পুলিশের মাধ্যমে ১৫ দিনের খাবার পৌছে দেন।

সুত্র জানায়, পরিবারের প থেকে একজন এসপির মোবাইলে কান্না জড়িত কন্ঠে ফোন করে বলেন, গরিব শ্রেণীর মানুষ সবাই ত্রাণ আর সাহায্য পাচ্ছে। কিন্তু মধ্যবিত্ত বিভিন্ন দোকান কর্মচারি পরিবারের অনেকেই সাহায্য পাচ্ছে না। ওই পরিবার পুলিশ সুপারের কছে কান্না জড়িত কন্ঠে জানান তার ঘরে আজ কোন খাবার নাই। ময়মনসিংহে আলোচিত এই মানবিক পুলিশ সুপার তাৎণিক তার নিজস্ব তহবিল হইতে ১৫ দিনের খাবার ডিবির মাধ্যমে পৌঁছে দেন। কিন্তু পুলিশ সুপারের কঠোর নির্দেশ এরকম পরিবারের নাম প্রকাশ করা যাবে না। এভাবেই তিনি মধ্যবিত্ত লোকদেরকে গোপনে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। পুলিশের একটি সুত্র জানায়, পুলিশের কাছ থেকে তাৎনিক সাহায্য পেয়ে ওই পরিবার আনন্দে কেঁদে ফেলে। পুলিশ এত দ্রুত সহায়তা বাড়িতে পৌঁছে দিবে সে কল্পনাও করে নাই। এ ব্যপারে পুলিশ সুপার সত্যতা স্বীকার করলেও পরিবার পরিবারের নাম ঠিকানা জানাননি।

এই মানবিক পুলিশ সুপার বস্তিবাসী, অসহায়, অস্বচ্ছল, দিন এনে দিন খাওয়া, কর্মহীন, শ্রমিক, বেদে পরিবারদের খুঁজে খুঁজে তালিকা করে তাদের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করে আসছেন। বিভাগীয় নগরীতে লকডাউন থাকায় না খেয়ে ফুটপাতে পড়ে থাকা ভাসমানদের আহার যুগিয়ে চলছেন এই পুলিশ সুপার। রান্না করা খাবারের প্যাকেট নিয়ে শহরে ঘুরে ঘুরে ভাসমান না খাওয়া মানুষের পেটে নিয়মিত আহার তুলে দিচ্ছেন।
পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের মানবাধিকতার খবর জেলার সকলস্তরে ব্যাপকভাবে চাউর হয়েছে। শনিবার পুলিশ সুপারের ফেইসবুকে জনৈকরা আবেদন করে পরিবার প্রধান সড়ত দুর্ঘটনায় পঙ্গু। তিনি ৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে না খেয়ে রয়েছেন এবং স্বামীহারা এক নারীর পরিবার মানবেতর দিনাতিপাত করছে। তাৎণিক ওসি ডিবি শাহ কামাল আকন্দের মাধ্যমে অসহায় পরিবারদের খুঁজে খুঁজে ১০ দিনের খাবার তুলে দেন।
এই মানবিক পুলিশ সুপার জানতে পারেন, ময়মনসিংহ নগরীর দিঘারকান্দায় আল মানার এতিমখানা বন্ধ। এতিমখানার ৪৮ জন শিার্থীর থাকার জায়গা নেই। বর্তমানে নতুন অবস্থানে কোনরকমে না খেয়ে আছেন। ঐ এতিমখানায় গিয়ে প্রধানের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে রবিবার রাতে নতুন ঠিকানায় ঘুরে ঘুরে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিতে মাঠে নামেন। ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ ১০ দিনের খাদ্য সহায়তা এতিমদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন।