মোঃ রোমান- ফরিদপুর প্রতিনিধি

মানুষটার বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে। কিন্তু সেখানে তিনি থাকতেন না। ফরিদপুরের মধুখালীতে থাকতেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে গতকাল ১১ এপ্রিল ২০২০ খ্রিঃ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। করোনা পরীক্ষা জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়।

হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতা শেষে গ্রামের ঠিকানায় অ্যাম্বুলেন্স করে লাশ নিয়ে রওয়ানা হন মৃতের ভাই। ফরিদপুর সদর থানার ওসি ফোন করে বিষয়টি অবহিত করেন ঝিনাইদহ সদর থানার ওসিকে। খবর পেয়ে প্রস্তুতি নেয় পুলিশ।

পথিমধ্যে মৃত ব্যক্তির ভাই ঝিনাইদহ সদর থানার ওসিকে ফোনে জানান, তার ভাইকে খাজুরা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে চান। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি সদর থানা এলাকায় পৌঁছায়। তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল, ঝিনাইদহ এবং সদর থানার ওসি মিলে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে খাজুরা গ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা হন। এদিকে, খবর পেয়ে সেখানে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। বিকেল ৫ টা ৪০ এর দিকে লাশ নিয়ে খাজুরা গ্রামে পৌঁছায় পুলিশ।

গ্রামে করোনা সন্দেহে মৃত ব্যক্তির লাশ আনার খবরে খাজুরা গ্রামের লোকজন যেন উধাও। সেখানে পৌঁছে লাশ গাড়ি থেকে নামানোর লোক নেই। খাটিয়া নেই। প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার দূরে একটি মসজিদ থেকে খাটিয়া আর দুজন লোক আনে পুলিশ। এরপর পুলিশ মৃত ব্যক্তির ভাইয়ের সাথে মিলে লাশটি খাটিয়াতে নামায়। কাঁধে করে কবরস্থানের অদূরে একটি মাঠে নিয়ে যায়। জানাজা পড়ানোর জন্য উপযুক্ত কাউকে না পেয়ে ইউএনও জানাজা পড়ান। এরপর মৃতের ভাই ও অন্যান্য লোকদের সহায়তার লাশটি কবরস্থানে বহন করে নিয়ে যায় পুলিশ।

বাঁশ গাছের নিচে কবরস্থান। কবর খুঁড়তে খুড়তেই সন্ধ্যা নেমে আসে। মোবাইল ফোনের টর্চের আলোতে চলে করর খোঁড়ার কাজ। কিন্তু কবর খোঁড়া যখন শেষের দিকে তখন শুরু হয় প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি। আর সেই ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মৃত ব্যক্তির দাফন কাজ সম্পন্ন করে পুলিশ। তথ্য ও ছবি সংগৃহীত