মেডিকেল কলেজের নতুন একাডেমিক ভবনে প্যাকেটবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে পিসিআর ও ভেন্টিলেটর মেশিন
শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক কাজের জন্য প্রায় ১০ মাস আগেই সিরাজগঞ্জ শহীদ এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে কেনা হয়েছিল পলিমার চেইন রি-অ্যাকশন (পিসিআর) মেশিন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এই মেশিনের সাহায্যেই করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। কিন্তু ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দামের মেশিনটিসহ শত কোটি টাকা দামের বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম দীর্ঘদিন ধরে প্যাকেটবন্দি। তা সত্ত্বেও দেশব্যাপী চলমান করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে অধিদপ্তরের কাছে নতুন একটি মেশিন চেয়ে আবেদন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৯ মাস আগেই মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের নির্দেশিত মুল্যায়ন কমিটি পিসিআর মেশিনসহ কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যবহৃত ৮টি ভেন্টিলেটর যন্ত্র কেনা হয় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে। সেগুলো মেডিকেল কলেজের নতুন একাডেমিক ভবনে প্যাকেটবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে।
এরইমধ্যে রবিবার (২৬ এপ্রিল) অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, চিকিৎসা সরঞ্জামসহ শহীদ এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের প্রায় আড়াইশ’ কোটি টাকার মালামাল ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই তদন্তও চলমান।
এ বিষয়ে কলেজের প্রকল্প পরিচালক ডা. কৃষ্ণ কুমার পাল বলেন, “১০ মাস আগে পিসিআর মেশিনটি অধ্যক্ষ নিজেই তার সার্ভে কমিটির মাধ্যমে বুঝে নেন। তারপরেও অধ্যক্ষ কর্তৃক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নতুন চাহিদা দেওয়ার বিষয়টি বোধগম্য নয়। ৮টি ভেন্টিলেটরও কলেজ স্টোরেই রয়েছে। অক্সিজেন প্ল্যান্ট ও ভ্যাকুয়াম মেশিন বসালে সেগুলোও ব্যবহার করা যাবে।”
তবে কলেজ অধ্যক্ষ ডা. নজরুল ইসলামের ভাষ্য, “কলেজ প্রকল্পের মাধ্যমে সংগৃহীত পিসিআর মেশিনটির বিষয় আমি অবগত নই। আর থাকলেও সেটি প্রকল্পের মাধ্যমে কেনা। সেটি ব্যবহার করতে গেলে নতুন করে বুঝে নেয়া বা অনুমতি পেতে বিড়ম্বনা রয়েছে। তাই নতুন পিসিআর মেশিনের জন্য গত ২৬ এপ্রিল অধিদপ্তর বরাবর চাহিদা পাঠানো হয়েছে।”
এদিকে, শহীদ এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ছাড়াও সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ৫টি ভেন্টিলেটর গত দুই বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। অব্যবহৃত রয়েছে সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের ১৩ ভেন্টিলেটর।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না মঙ্গলবার ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “সিরাজগঞ্জসহ অনেক জায়গাতেই ভেন্টিলেটর ও পিসিআরসহ গুরুত্বপুর্ণ অনেক দামি যন্ত্র অপরিকল্পিতভাবে সরবরাহ করা হয়েছে। বর্তমানে সেগুলো অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। অতিসত্বর সেগুলো চালুর জন্য ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে।”
source : dhakatribune