বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জামাতে আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। পাশাপাশি, নামাজ আদায়ের সময় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাঁড়াতে হবে

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবার দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় হচ্ছে না ঈদুল ফিতরের জামাত।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে খোলা মাঠ ও ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসলামী ফাউন্ডেশন। তাই শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে শুক্রবার (১৫ মে) জানিয়েছেন ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।

তিনি জানান, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসন শোলাকিয়ায় জামাত অনুষ্ঠানের কোনো প্রস্তুতি নেয়নি।

এবার শোলাকিয়া ঈদগাহে ১৯৩তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

ঈদের জামাত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার বিকালে আলেম-ওলামাদের সাথে বৈঠক করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বৈঠকে খোলা মাঠ ও ঈদগাহে ঈদের জামাত না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলে, “ইসলামি শরিয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামায়াত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বসহ আমাদের দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিজনিত ওজরের কারণে মুসল্লিদের জীবনের ঝুঁকি বিবেচনা করে এবছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামায়াত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হলো।”

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জামায়াতে আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না। নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে। এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে। জামায়াত শেষে কোলাকুলি ও পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মসনদ-ই-আলা ঈশাখাঁর বংশধর ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় “সোয়া লাখি মাঠ”। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে নাম ধারণ করেছে আজকের শোলাকিয়া মাঠ।

২০১৬ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হয়। এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন বেশ কয়েকজন। তবু থেমে থাকেনি ঈদের জামাত। তবে এই প্রথমবারের মতো ঈদের দিনেও নীরব থাকছে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া।