ছোটবেলা থেকে ভূগোল বইয়ে পড়া আছে পৃথিবীতে মহাদেশের সংখ্যা সাত। এই তথ্য তো সবারই জানা। কিন্তু এবার সেই জানা বদলাতে হতে পারে। বিজ্ঞানীরা অষ্টম মহাদেশের অস্তিত্বের কথা বলছেন। সেই দাবি অবশ্য নতুন নয়। তবে এই প্রথমবার অষ্টম মহাদেশের সম্ভাব্য মানচিত্র সামনে আনলেন বিজ্ঞানীরা। সেই সঙ্গে অষ্টম মহাদেশের আয়তনসহ আরো কিছু তথ্যও জানানো হয়েছে। তবে সেই মহাদেশ পৃথিবীর এক ভাগ স্থলের অংশ নয়। রয়েছে তিন ভাগ জলের তলায়। বহু বহু বছর আগে এই অষ্টম মহাদেশ সমুদ্রের অতলে তলিয়ে গেছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। এই মহাদেশের নাম জিলান্ডিয়া।
অষ্টম মহাদেশ জিলান্ডিয়া নিয়ে ১৯৯৫ সাল থেকে গবেষণা করে আসছেন বিজ্ঞানীরা। তিন বছর আগে ২০১৭ সালে সেই গবেষণা সম্পূর্ণ হয়। এবার সমুদ্রের অতলে লুকিয়ে থাকা অষ্টম মহাদেশের নানা তথ্য সামনে এসেছে। কেমন সেই মহাদেশের চেহারা? নিউজিল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা এর সম্ভব্য মানচিত্রও তৈরি করে ফেলেছেন। নিউজিল্যান্ডের গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিএনএস সায়েন্স এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। সেই জিএনএস সায়েন্স সংস্থাই অষ্টম মহাদেশের মানচিত্র প্রকাশ করেছে।
অষ্টম মহাদেশ জিলান্ডিয়া অস্ট্রেলিয়ার পূর্বে নিউজিল্যান্ডের ঠিক উত্তরে। বিজ্ঞানীদের দাবি অনুসারে, এই মহাদেশ প্রায় আড়াই কোটি বছর আগে সমুদ্রে ডুবে যায়। মানচিত্র দেখে বোঝা যায়, অষ্টম মহাদেশ জিলান্ডিয়ার মাঝের একটি ছোট অংশই শুধু ডুবে যায়নি। আর ওই জেগে থাকা অংশই এখনকার নিউজিল্যান্ড দেশ।
এখন পর্যন্ত জিলান্ডিয়া সম্পর্কে যে যে তথ্য সামনে এসেছে, তা দিয়ে অষ্টম মহাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে এর টেকটোনিক ও ব্যাথিমেট্রিক নকশা প্রস্তুত করেছেন নিউজিল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের অনুমান, সেই মহাদেশের আয়তন ছিল ৫০ লাখ বর্গকিলোমিটারের মতো। গবেষণায় আরো দাবি করা হয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরে প্রায় তিন হাজার ৮০০ ফুট গভীরে তলিয়ে গেছে এই মহাদেশ। যদিও লর্ড হাউ রাইজে বলস পিরামিড নামে ওই মহাদেশের একটি পাহাড় সমুদ্রের ওপরে বেরিয়ে রয়েছে। এ থেকেই অনুমান করা যায় যে সমুদ্রের ভেতরে একটা বড় ভূখণ্ড ডুবে রয়েছে। সেটাই অষ্টম মহাদেশ জিলান্ডিয়া।
সূত্র : দ্য ওয়াল।