মোহাম্মদ ইমাম হোসেন, কাতার প্রতিনিধি
আজ কাতারের রাজধানী দোহায় কাতারের প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সমাজ বিষয়ক মন্ত্রী ইউসুফ মোহাম্মদ আল ওথমান ফাকরুর সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো: জসীম উদ্দিন অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে কাতারে অবস্থানরত বাংলাদেশী কর্মীদের কোম্পানী পরিবর্তন এবং দেশে আটকে পড়া প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রত্যাবর্তন বিষয়ে আলোচনা করেন।
এ সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কাতারের সামগ্রিক উন্নয়নে বাংলাদেশের কর্মীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশী কর্মীদের স্পন্সরশীপ পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কাতারের মন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেন। তিনি বাংলাদেশের কর্মীগণ যাতে সহজে নিয়োগকর্তা পরিবর্তন করতে পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। মন্ত্রী বাংলাদেশী কর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং স্পন্সরশীপ পরিবর্তনের বিষয়ে সম্ভাব্য সকল প্রকার সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
এছাড়া, রাষ্ট্রদূত কাতারে অবস্থানরত অনেক পরিবারের উপার্জনশীল সদস্য, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন কোম্পানীতে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মী যারা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পূর্ববর্তী সময়ে ছুটিসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে গিয়ে আটকে পড়েছেন, তাদেরকে Exceptional Entry Permit প্রদানের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে পুনরায় কাতার আসার সুযোগ প্রদানের বিষয়ে মন্ত্রীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এ সময়ে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে আটকে পড়া প্রবাসী বাংলাদেশী যারা দূতাবাসে আবেদন করেছেন তাদের একটি তালিকা মন্ত্রীর নিকট হস্তান্তর করেন। কাতারের মন্ত্রী এ ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে কাতার সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সংস্কারমূলক (ওয়েজ প্রটেকশন সিস্টেম, ডিসপিউট সেটেলমেন্ট সিস্টেম, স্পন্সরশিপ পরিবর্তন ইত্যাদি) কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের কর্মীগণ যাতে সংস্কারের কাঙ্খিত সুফল পেতে পারে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। শ্রম মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা বাংলা ভাষায় প্রদানের বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রী বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষায় লিফলেট প্রস্তুতের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।
সভায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে পেশাদার ও দক্ষ কর্মী নিয়োগ, ইতিবাচক কাজে যুক্ত প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বীকৃতি এবং যে সমস্ত কর্মী বাংলাদেশ ও কাতারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া, বাংলাদেশী কর্মীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে একটি ফলোআপ সভার প্রস্তাব করা হলে তা নিশ্চিত করা হয়। রাষ্ট্রদূত কাতারের মন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণের কথা জানালে তিনি সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে জানান।