সোহেল রানা মালয়েশিয়া প্রতিনিধি।
ফরাসিদের শাস্তি দেওয়ার অধিকার মুসলমানদের আছে: মাহাথির ফ্রান্স প্রেসিডেন্টে এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্যের বিরুদ্ধে এবার মুখ খুলেছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে তিনি এ কড়া মন্তব্য করেন। তিনি বলেছেন, ‘অতীতের গণহত্যার কারণে লাখ লাখ ফরাসিকে হত্যা করার অধিকার মুসলমানদের আছে, কিন্তু মুসলমানরা তা করেনি। যেহেতু আপনারা (পশ্চিমা বিশ্ব) একজন ক্ষুব্ধ ব্যক্তি কী করেছেন, সেটার জন্য সব মুসলমান ও মুসলমানদের ধর্মের ওপর দোষ চাপিয়ে যাচ্ছেন, তাই মুসলমানদেরও ফরাসিদের শাস্তি দেওয়ার অধিকার আছে। বেশিরভাগ মুসলমান প্রতিশোধ নিতে ‘চোখের বদলে চোখ’ উপড়ে নেওয়ার আইন প্রয়োগ করে না। মুসলমানরা এটা করে না। তাই ফরাসিদের এটা করা উচিত হবে না’। ৯৫ বছর বয়সী মাহাথির মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। নিজের টুইটার একাউন্টেও একই মন্তব্য পোস্ট করেছিলেন মাহাথির। অবশ্য, টুইটার কর্তৃপক্ষ তাদের ‘বিদ্বেষ বিরোধী নীতি’-এর আওতায় এনে মাহাথিরের ওই টুইটবার্তাটি মুছে দিয়েছে। তবে টুইটে ‘ফরাসিদের শাস্তি’ দেওয়ার কথা বললেও ফ্রান্সের বিদ্রুপাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি এবদুতে ছাপা হওয়া মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র ক্লাসে দেখানোর কারণে এক ফরাসি শিক্ষককে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই সমর্থন করেন না মাহাথির মোহাম্মদ। ফ্রান্সের এক ক্লাসে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র দেখানোয় চলতি মাসেই ফ্রান্সের ওই শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের পর ফ্রান্সজুড়ে ইসলাম ও মুসলিম বিশ্বের নেতাদের নিয়ে ব্যঙ্গচিত্রগুলোর প্রদর্শনী করছে। এতে আরও উত্তেজনা বাড়ছে। আর এসব কিছুতে সরাসরি সমর্থন দিচ্ছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেছেন, ফরাসি মূল্যবোধকে দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করা রক্ষণশীল ইসলামী মূল্যবোধকে ঠেকাতে তিনি তার প্রচেষ্টা কয়েকগুণ বাড়াবেন। তার এ বক্তব্য বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মুসলমানকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান ফরাসি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে ম্যাক্রোঁর ‘মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করা দরকার’ বলে মন্তব্য করেন। যার প্রতিক্রিয়ায় শার্লি এবদুতে এরদোয়ানের ব্যঙ্গচিত্রও আঁকা হয়। তুর্কি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফ্রান্স। তারা আঙ্কারা থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এরদোয়ান তুর্কিদেরকে ফরাসি পণ্য বয়কট করতে বলেছেন।