শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুরে এমপি ইকবাল হোসেন অপু’র পিতা মরহুম অ্যাডভোকেট সুলতান হোসেন মিয়ার নামে ফুটবল টুর্নামেন্ট ঘিরে জেলাজুড়ে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না দেওয়ায় জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি ও শরীয়তপুর জজকোর্টের এপিপি অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন হাওলাদারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় স্থানীয় শরীফ হাওলাদারসহ কয়েকজন। শুক্রবার দুপুরে জাজিরা উপজেলার নাওডোবা বাজারে প্রকাশ্যে এ হুমকি প্রদান করেছে বলে জানাযায়। শরীফ হাওলাদার স্থানীয় এমপি’র ঘনিষ্ঠ সহচর বলে পরিচিত। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী আইনজীবী আলমগীর হোসেন হাওলাদার।
অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে আমি নাওডোবা বাজারের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম। এমন সময় নাওডোবা ইউনিয়নের আলীমুদ্দিন হাওলাদার কান্দী গ্রামের সলেমান হাওলাদারের ছেলে এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ শরীফ হাওলাদার ও তার কিছু সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে এসে আমার কাছে ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম করে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় চাঁদাবাজ শরীফ হাওলাদার আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অপমান অপদস্থ করে। আমি এর প্রতিবাদ করায় শরীফ হাওলাদার আমাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়। ঘটনার সময় উপস্থিত বাজারের লোকজন এর প্রতিবাদ জানায়। খেলার নাম করে শরীফ হাওলাদার ও তার লোকজন বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা চাঁদাবাজি করেছে। এর আগেও সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেছে। আমি আতঙ্কের মধ্যে আছি। যে কোন সময় শরীফ হাওলাদার ও তার লোকজন আমার ক্ষতি সাধন করতে পারে। এ ব্যাপারে আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি এর সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার দাবি করছি।’
স্থানীয় বাবুল হাওলাদার, দাদন ঢালী ও ঠান্ডু চোকদারসহ বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ‘শরীফ হওলাদার ও তার লোকজন অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন হাওলাদারের কাছে প্রকাশ্যে চাঁদা দাবি করেছে। অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন হাওলাদার চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শরীফ হাওলাদার তার সাথে খারাপ আচরণ করেছে এবং তাকে হুমকি দিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
এ বিষয়ে শরীফ হাওলাদার মুঠোফোনে বলেন,‘ স্থানীয়ভাবে আমরা আমাদের এমপি ইকবাল হোসেন অপু’র বাবা মরহুম অ্যাডভোকেট সুলতান হোসেন মিয়ার নামে একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছি। এ টুর্নামেন্টের জন্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা তুলেছি। অ্যাডভোকেট আলমগীর হাওলাদারের কাছে চাঁদা চাইলে সে উল্টাপাল্টা কথা বলে। এ নিয়ে তার সাথে আমার একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে।’
নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, এমপি অপুর লোকজেনরা প্রায়ই কোন না কোন অজুহাতে জেলার বিত্তবানদের নিকট
থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে।আর এ বিষয় নিয়ে এমপি’র নিকট গেলে উল্টো ঝামেলায় পড়তে হয়।মুখ বুজে তাই চাঁদাবাজদের অত্যাচার সইতে হয় সকলের।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুকে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কর দিলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
এ ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে জেলায় আওয়ামী লীগের যেমন বদনাম হবে তেমন সরকারেরও দুর্নাম হবে বলে মনে করেন এলাকাবাসি।