শেখ সবুজ আহমেদ, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার খোকসা পৌরসভা চত্বরে বয়স্ক এবং বিধবা ভাতাভোগীদের স্বপক্ষে কথা বলতে গিয়ে ইউনিয়ন সমাজকর্মী বিকাশ কুমার সরকার এর হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন পৌরসভা নয় নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসেম আলী। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ( ২০.০২.২০২১ ইং ) ভাতা ভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, বয়স্ক বিধবা ভাতাভোগীরা ভাতার কার্ড হালনাগাদ করতে এবং খোকসা সমাজ সেবা কার্যালয়ের সমস্ত ভাতার টাকা সরাসরি ভুক্তভোগীর নিকট পৌছানোর লক্ষ্যে পৌরসভা চত্বরে ভিড় জমান হয়। এবং আরো বলেন, লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থাকা ভাতাভোগী বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সাথে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকেন, সমাজ সেবা অফিসে কর্মরত, ইউনিয়ন সমাজ কর্মী বিকাস কুমার সরকার, এক পর্যায়ে তিনি রাগান্বিত হয়ে লাইনে দাড়িয়ে থাকা ভুক্তভোগীদের ধাক্কা দিলে পড়ে যান ভাতাভোগী মোছা: কাজলী খাতুন (৪৫), ঘটনার বিবরনে, কাজলী খাতুন বলেন, আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম, এবং হাশেম কমিশনারকে দেখামাত্রই তার কাছে এগিয়ে যেতেই (ইউনিয়ন সমাজ কর্মী বিকাস কুমার সরকার ) আমার দিকে এগিয়ে এসে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। আমি চার মাস আগে অপারেশন করেছি আমি এখনো অসুস্থ।তার পেছনে দঁড়িয়ে থাকা আর একজন ভাতাভোগী মরিয়ম খাতুন (৫৫) বলেন, আমি উনার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম উনি পড়ে গেলে আমিও পড়ে যাই।

এ সময় আরো অনেকেই বলেন, এই বিকাশ সরকার সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নারী কে হেনস্থা করত। এবং কি তার নামে বিভিন্ন  মেয়েলি ঘটিত কেলেঙ্কারি ও আছে। একই ঘটনার শিকার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভাতাভোগী বিধবা শুকুরন (৬০), তিনিও অভিযোগ করে বলেন, এই ইউনিয়ন সমাজ কর্মী বিকাস কুমার সরকার তিনি অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এবং কি সবাইকে টাকা আনতে বাধ্য করেন। এবং সবার সঙ্গেই খারাপ ভাষায় কথাবার্তা বলেন। এ সময় বৃদ্ধা শুকুরন এর সাথে থাকা তার বৌমা জেসমীন আরা (৩০ ) বলেন,  হাসেম কমিশনার ওখানে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল তার সামনেই অনেককেই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে, এবং একটি মুরব্বি লোককেও যখন ফেলে দেয় তখন হাশেম কমিশনার প্রতিবাদ করে।

তবে এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: সেলিম হুসাইন বলেন, সামাজ সেবা অফিসের ঐ কর্মচারী বিভিন্ন সময় ভাতাভোগীদের সাথে খারাপ ব্যবহার সহ তাদের কাছ থেকে কোন কারন ছাড়াই ২০০/৩০০ করে টাকা নিত, এমন অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। এ বিষয়ে ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসেম আলী, মুঠোফোনে বলেন, ঘটনা টা অনভিপ্রেত, আমার কাছে জনৈক মোতাহার মোল্লা এসে বলেন, ভাই ঐখানে তো সমাজ সেবা অফিসের একজন, লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধাদের সাথে খারাপ আচরন করছে।তারপর আমি অনেকক্ষন ধরে বিষয়টা লক্ষ্য করি এবং এক পর্যায়ে তাকে বলি আপনে এমন আচরন করছেন কেন? তিনি উল্টো আমাকে প্রশ্ন করে, আপনি এখানে কি করেন, এই নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনার বিষয়ে, ইউনিয়ন সমাজ কর্মী বিকাস কুমার সরকার মুঠোফোনে বলেন, সরকার ভাতাভোগীদের মোবাইল ব্যাংকিং করে দিচ্ছে তো, এটা এ্যাপ্রুভ করতে আসছে নগদ এর কর্মচারীরা তো ওদের আমরা হেল্প করতিছি, দুই,চার পাঁচ, সাত শ’ লোক হইছে, তো আমি অনেক কষ্টমষ্ট করে সিরিয়াল করে দিছি, এ রকম করলে কাজের সুবিধা হয়। ওখানে অনেক লোক তো, কার গায়ে ধাক্কামাক্কা লেগে সিড়ির দোপে একজন আর একজনের সাথে লাগেছে, তো তখন কাউন্সিলর সাহেব বলল যে, আপনি ধাক্কা মারে ফেলে দিলেন ক্যা, আমি বললাম, আমি ধাক্কা মারি নাই, আমিও হেল্প করতি আইছি, আপনেও হেল্প করতি আইছেন, তো সেই সময় সে ( ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসেম আলী ) বলে, এই শালা তুই ধাক্কা মারলি ক্যা, কয়া চেয়ার দিয়ে আমার এটা বাড়ি মারেছে। তবে তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি তা অস্বীকার করেন।

এ ঘটনায় খোকসা থানায় মামলা হয়েছে বলে জানান,  থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কামরুজ্জামান তালুকদার। মামলা নং (৯), ধারা (৩৩২) (৩৩৩) (৩৫৩) ( ৫০৬) দন্ডবিধি।