টানা নবম সপ্তাহের মতো ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর নতুন সরকারের আনা বিচার বিভাগ সংস্কারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে চলমান এ বিক্ষোভে শনিবার লাখো মানুষ অংশ নেন। তেলআবিবসহ ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি শহরে শনিবার রাতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করছিলেন বিক্ষোভকারীরা। 

বিক্ষোভের সময় আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশি বাধা অতিক্রম করে বিক্ষোভ মিছিল সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। তাদের প্রতিহত করতে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ, ব্যবহার করা হয় জলকামানও। এতে অন্যান্য দিনের বিক্ষোভের মতো এদিনও দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রাস্তা অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।

এ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৫৩ বছর বয়সী ইতিহাসের শিক্ষক রনেন কোহেন বলেন, ‘আমি শাসকদলের বিপ্লবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে এসেছি। সরকার আমাদের ওপর নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে। আমি আশা করি, বিশাল এই বিক্ষোভ কার্যকর হবে এবং প্রমাণ করবে যে আমরা হাল ছেড়ে দিই না।’

৬৮ বছর বয়সী ওফির কুবিটস্কি বলেন, ‘ইসরায়েল একটি স্বৈরাচারী দেশে পরিণত হওয়ার মতো বড় বিপদের মুখে রয়েছে। আমরা জয়ী না হওয়া পর্যন্ত বারবার বিক্ষোভ করতে আসব।’

সম্প্রতি ইসরায়েলের বিচারব্যবস্থাকে সংশোধন এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা সম্প্রতি উন্মোচন করেছে সেখানকার নতুন সরকার। এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হলে ইসরায়েলের পার্লামেন্টের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলো বাতিল করা সহজ হবে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, নেতানিয়াহু সরকারের এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের বিচারিক স্বাধীনতাকে পঙ্গু করবে, দুর্নীতিকে আরো উৎসাহিত করবে, সংখ্যালঘুদের অধিকার নষ্ট করবে এবং ইসরায়েলের আদালতব্যবস্থাকে বিশ্বাসযোগ্যতা থেকে বঞ্চিত করবে। এ ছাড়া নতুন এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের চেক অ্যান্ড ব্যালান্স সিস্টেমকে হুমকির মুখে ফেলবে বলেও দাবি করে আসছেন বিক্ষোভকারীরা।

মূলত ওই আইন পাস হলে আইনসভা এবং নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমিত হয়ে যাবে। একই সঙ্গে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তমূলক ক্ষমতা পাবেন পার্লামেন্টের আইন প্রণেতারা।

সূত্র : রয়টার্স