অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই শাখা ছাত্রলীগের সব কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনকে লাঞ্ছিত করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে তাঁকে পলিটেকনিকের ভেতরেই পুকুরের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। এ সময় ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গিয়ে অধ্যক্ষকে পুকুর থেকে টেনে তোলেন।
এই ঘটনায় অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন বাদী হয়ে গতরাতে মূল অভিযুক্ত রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। নগরীর চন্দ্রিমা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। রাতে আরএমপি মুখপাত্র কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানান।
অধ্যক্ষ ফরিদ বলেন, ‘সৌরভের তিন বিষয়ে রেফার্ড (অকৃতকার্য) আছে। এর পরও সে আবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সকালে (গতকাল সকাল) দলবল নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। কিন্তু তাকে জানানো হয়, এ বিষয়ে ডিপার্টমেন্টের কো-অর্ডিনেটরের সঙ্গে কথা না বলা পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। এতে সৌরভ আমাকে হুমকি দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে চলে যায়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কয়েকজন শিক্ষার্থী কালের কণ্ঠকে জানান, হুমকি দেওয়ার কিছুক্ষণ পর অধ্যক্ষ বের হলে তাঁর সঙ্গে প্রথমে কথা-কাটাকাটিতে লিপ্ত হন সৌরভসহ আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী। এরপর তাঁরা অধ্যক্ষের ওপর চড়াও হন এবং তাঁকে লাঞ্ছিত করে ধাক্কা দিয়ে পুকুরের পানির মধ্যে ফেলে দেন। ওই শিক্ষার্থীরা আরো জানান, অধ্যক্ষ তাঁর কার্যালয় থেকে বের হয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে পুকুরপার দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন পলিটেকনিকের ভেতরে মসজিদ থেকে জোহরের নামাজ পড়ে বের হয়ে তাঁর কার্যালয়ের দিকে পুকুরপার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এ সময় ছাত্রলীগকর্মীরা সৌরভের নেতৃত্বে তাঁর গতি রোধ করেন। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেন।