মাহফুজ বাবু

বাহরাইনে বুড়িচংয়ের যুবককে ৭তলার ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগে ৩প্রবাসী আটক
( বিয়ে করা আর হলো না প্রবাসী বিল্লালের)

কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলা সাদকপুর গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী বিল্লাল হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক মঙ্গলবার দুপুরে (বাহরাইন সময় সারে ১২টা) বাহরাইনের আওয়ালি নামক এলকার একটি ৭তল ভবনের ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগে ৩ বাংলাদেশী নাগরিক কে আটক করেছে সেদেশের স্থানীয় পুলিশ।

নিহত প্রবাসী বিল্লাল হোসেনের চাচাত ভাই অবঃ সেনা সার্জেন্ট মোঃ মোস্তফা কামাল এবং পরিবারের বরাত দিয়ে জানা যায়, গত ২০০৫ সালের মে মাসে জেলার বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের সাদকপুর গ্রামের মোঃ শহিদুল্লাহর ৩য় ছেলে বিল্লাল ভাগ্য বদলের আশায় পরিবারের সুখের জন্য প্রবাসে পারি জমায়। এরপর গত ১৪বছরে আর দেশে আসেনি সে। দেশে পরিবারের সকল দেনা পাওনা পরিশোধ করে গত ৪-৫ বছরে প্রায় ১০ -১২ লক্ষ টাকা জমা করে নিজের কাছে। সম্প্রতি দেশে ছুটিতে এসে বিয়ে করার কথা ছিলো তার, এজন্য প্রায় ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও বিয়ের সকল মালামাল ক্রয় করে লাগেজে ভরে রেখেছে বলেও পরিবারের সকলকে জানায় গত বৃহস্পতিবারেও । বাহরাইনের পিসিসি নামক একটি কোং এর প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মীর পোরম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতো। আগামী ১৪/১৫ ই ডিসেম্বর ছুটিতে বাড়িতে আসার কথা ছিলো তার। কিন্তু হঠাৎ গত মঙ্গলবার দুপুরেই সহকর্মী প্রবাসীদের একজন ইমুতে ফোন করে জানায় বিল্লাল আত্মহত্যা করেছে। এসব কথা বিশ্বাস না করলেও পরে ফেসবুকে পোষ্ট দেখে সে দেশে এম্বাসাডরের সাথে।কথা বলে বিল্লালের পরিবারের লোকজন। তারা তাদের জানায়, কোন ভাবেই বিল্লাল আত্মহত্যা করতে পারে না। সোমবার বিকালে এবং গতকাল সকালে হাসিখুশি কথা বলেছে সে সবার সাথে ফোনে।

এদিকে বাহরাইনে বিল্লাল হোসেনের প্রবাসী সহকর্মীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ঘটনার পর খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ ও বাংলাদেশ এম্বাসীর লোকজন এসে লাশ উদ্ধার করে সালমানীয়া হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। প্রাথমিক তথ্যে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হলেও বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয় বাহরাইনের স্থানীয় প্রশাসনের। পরে বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখার পর আত্মহত্যা নয় বরং একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলেই সন্দেহ হয় তাদের। আর এই সন্দেহের ভিত্তিতে নিহত বিল্লাল হোসেনের কোম্পানিতে চাকুরী করা তিন প্রবাসী বাংলাদেশীকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের নাম সহ বিস্তারিত এখনো জানা যায় নি।
এদিকে আকস্মিক মৃত্যুর খবরে বিল্লালের পরিবারের সদস্যদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, ভাই বোন ও স্বজনের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আশেপাশের পরিবেশ।