বাবু

মুক্তিযুদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবেই স্বিকৃত বাংলাদেশে। যাদের অবদানে আজকের এই বাংলাদেশ। অথচ অসহায় দরিদ্র স্বাধীন দেশের কারিগর মরহুম বীর মুক্তিযুদ্ধার পরিবার ও সন্তানেরা আজ নিজের পিতার রেখে যাওয়া সম্পদই খোয়াতে বসেছে কুচক্রি মহলের দৌরাত্মে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বারবার চিঠি লিখেও কোন প্রকার প্রতিকার বা সহযোগিতা পাচ্ছে না বলেও জানান অসহায় মুক্তিযুদ্ধার স্ত্রী সন্তানরা । দরিদ্র দিনমজুর মৃত মুক্তিযুদ্ধার সন্তানেরা পিতার সম্পত্তি রক্ষা করতে ঘুরছেন দপ্তরে দপ্তরে। স্থানীয় ক্ষমতাবান ধনীদের ক্ষমতার দাপট আর টাকার কাছে অসহায় মরহুম মুক্তিযুদ্ধার পরিবারেরের শেষ সম্বলটাও হারাতে বসেছে। জেলার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়ন এলাকার প্রয়াত মুক্তিযুদ্ধা পিতার রেখে যাওয়া শেষ ২০শতাংশ ভূমি জবর দখলের পায়তারা করছে স্বজন ও স্থানীয় কাবিলা ইস্টার্ণ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ! ভুক্তভোগী মরহুম মুক্তিযুদ্ধা নূরুল ইসলামের সন্তানরা জানান , ন্যায় বিচারের আশায় ৬ ভাইবোন ও মা’কে নিয়ে একাধিকবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও গণভবনের দরজায় কড়া নেড়েও দেখা করতে পারেননি তারা। সকল নথিপত্র সহ চিঠি দিয়েছেন কয়েকবার তবুও কোন ফলাফল না পেয়ে, অবশেষে প্রতিবেদকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করে আকুতি জানিয়েছেন ন্যায় বিচার প্রাপ্তির। কোন অন্যায় আবদার কিংবা সরকারি অনুদান বা চাকরির জন্য নয়। , কেবলমাত্র নিজেদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় সঠিক বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছে পরিবারটি ।
দেশস্বাধীনের পর পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জে চলে যায় মুক্তিযুদ্ধা পিতা নূরুল ইসলাম । সেখানেই বসবাস করতেন। মাঝখানে একবার এলাকায় আসেন। নূরুল ইসলামের মা মলেকা বানু তার নিজস্ব সম্পত্তি থেকে বুড়িচং উপজেলার মনিপুরা মৌজার ২০ শতাংশ ভুমি ছেলের নামে দানপত্র দলিল করে দেন। দলিল নং ৪১৯৬/৮৯। কিছুদিন এলাকায় থেকে জীবিকার তাগিদে আবারও তিনি পরিবার নিয়ে চলে যান নারায়ণগঞ্জে। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে পরিবার নিয়ে এলাকায় আসেন নূরুল ইসলাম। এসে দেখতে পান তার নামে মায়ের দানপত্র দলিলকৃত সম্পত্তি তার অবর্তমানে ভাই ও বোনেরা বিএস খতিয়ান থেকে তার নাম বাদ দিয়ে তাদের নিজেদের নামে করিয়ে নিয়েছেন। পরে ভাই ও বোনে সন্তানরা সেই সম্পত্তি স্থানীয় কাবিলা ইষ্টার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে বিক্রির জন্য বায়না করেন। খবর পেয়ে মুক্তিযুদ্ধা নুরুল ইসলামের সন্তানরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে নিজেদের নামে জমির দলিল দেখিয়ে বাঁধাও প্রদান করেন। মূলত এই সম্পত্তিটুকু ছাড়া দরিদ্র মুক্তিযুদ্ধা নুরুল ইসলামের আর কোন সম্পত্তিই নেই। মুক্তিযুদ্ধা পিতার মৃত্যুর পর এলাকার স্থানীয় মাতবর, উপজেলা, জেলা, ইউনিয়ন, মুক্তিযুদ্ধা দপ্তর সহ বহু দপ্তরে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত দরিদ্র পরিবারটি পিতার শেষ সম্বলটুকু আকড়ে ধরে বাঁচার আকুতি জানিয়ে দিনের পর দিন ঘুরেলেও কোন সুরাহা পায়নি। শেষে আদালতের স্মরণাপন্ন হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে সম্পতিটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকলেও প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে ইষ্টার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জমির দখল নিয়ে তাতে ভবন নির্মানের কাজ করে চলেছে।
এমন অবস্থায় ভূমি ও গৃহহীন অসহায় দরিদ্র মরহুম মুক্তিযুদ্ধার বৃদ্ধা স্ত্রী ও সন্তানেরা পিতার শেষ সম্বলটুকু ফিরে পেতে আইনানুগ সহায়তা ও ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সহায়তা কামনা করছেন।