প্রত্যেক মুসলমান এ কথা বিশ্বাস করে যে দুনিয়ার জীবনই একমাত্র জীবন নয়। মৃত্যুর পর রয়েছে অনন্তকালের জীবন। ইসলামের পরিভাষায় সেটাকে আখিরাত বা পরকাল বলা হয়। পরকালে দুনিয়ার প্রতিটি কাজের হিসাব-নিকাশ হবে। ভালো-মন্দ কাজের প্রতিদান ও প্রতিফল দেওয়া হবে। পরকালে গোটা জীবনের প্রতিটি কাজ নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। পরকালে সব মানুষ বিশেষভাবে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হবে, সেগুলোর কয়েকটি এখানে আলোচনা করা হলো—

কবরে তিন প্রশ্ন

পরকালের প্রথম ধাপ হলো কবর। কবরে বান্দাকে তিনটি বিশেষ প্রশ্ন করা হবে। বারা বিন আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কবরে মানুষকে তিনটি প্রশ্ন করা হবে। এক. তোমার রব কে?

দুই. তোমার দ্বিন কী? তিন. এই লোকটি কে ছিলেন, যাকে তোমাদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল? কবরবাসী যদি মুমিন হয়, তাহলে এসব প্রশ্নের যথাযথ জবাব দিতে পারবে। আর যদি কাফির হয়, তাহলে বলবে, আফসোস! আমি কিছুই জানি না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৪৫৩; তিরমিজি, হাদিস : ৩১২০)

কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজ সম্পর্কে প্রশ্ন

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন মানুষের আমলসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে।’ রাসুল (সা.) আরো বলেন, আমাদের রব ফেরেশতাদের বলবেন—অথচ তিনি সর্বাধিক অবগত, তোমরা আমার বান্দার নামাজ দেখো, সে তা পরিপূর্ণ করেছে, নাকি অসম্পূর্ণ রেখেছে। যদি পরিপূর্ণ হয়, তাহলে পূর্ণই লেখা হবে। আর যদি তাতে কিছু কমতি থাকে, তাহলে তিনি বলবেন, তোমরা দেখো আমার বান্দার কোনো নফল (নামাজ) আছে কি না। যদি তার নফল নামাজ থাকে তিনি বলবেন, আমার বান্দার ফরজের ঘাটতিকে নফল দ্বারা পূর্ণ করো। অতঃপর এভাবেই অন্য আমলসমূহকে গ্রহণ করা হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৮৬৪)

অন্য বর্ণনায় এসেছে,

‘কারো নামাজ যদি সঠিক হয়, তাহলে সে সফলকাম ও কৃতকার্য হবে। আর নামাজ যদি ত্রুটিপূর্ণ হয় তাহলে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৪১৩; নাসাঈ, হাদিস : ৪৬৫)