মোঃ রোমান- ফরিদপুর প্রতিনিধি

ভাঙ্গা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের জান্দি গ্রামে যৌতুকের বলি হয়ে গৃহবধু পারুলী আক্তারকে স্বামী,শাশুড়ী ও তার পরিবারের সদস্যরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক পর্যায়ে তাকে বিষ খাইয়ে হত্যারও অভিযোগ পাওয়া যায়।

ঢাকার বকশীবাজার এলাকায় কর্মরত কারাপুলিশ সদস্য রবিউল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের শারীরিক নির্যাতনে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ওই গৃহবধূ। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে মানসিক যন্ত্রনা আর অবুঝ ২ সন্তান নিয়ে অবশেষে ঠাই হয়েছে তার পিতার বাড়িতে। কিন্ত অস্বচ্ছল পিতার বাড়িতে গিয়ে ২ সন্তান নিয়ে সে অত্যন্ত মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছে। এ ঘটনায় ফরিদপুর আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পারিবারিক ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বকশীবাজার পুরাতন জেলখানায় কর্মরত কারা পুলিশ সদস্য উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের জান্দি গ্রামে ছাত্তার মাতুব্বরের ছেলের সাথে উপজেলার পৌরসদরের ভারইডাঙ্গা গ্রামের আঊয়াল মাতুব্বরের মেয়ে পারুলী আক্তারের সাথে প্রায় ১০ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়।

বিয়ের কিছুদিন ভালই কাটছিল তাদের সুখের সংসার। এরই মধ্যে জন্ম হয় ২ সন্তান.রাবিয়া ইসলাম রোজা(৬)ও রোকিয়া ইসলাম রিয়া(৭ মাস)। কিন্ত কিছুদিন পর স্বামী রবিউলের আসল রূপ বেরিয়ে আসে। তার উপর নেমে আসে অমানষিক নির্যাতন। মঝেই মাঝেই বাবার বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা ও উপঢৌকন আনার জন্য বায়না ধরত সে।

কয়েকবার তার বায়না মেটাতে টাকা-পয়সা এনে দিলেও চাহিদার পরিমান বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে –শাশুড়িসহ পরিবারের সবাই মিলে নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে তার জীবন দুর্বীসহ করে তোলে। গৃহবধু পারুলী আক্তার সাংবাদিকদের জানান, বিয়ের কিছুদিন পর স্বামী রবিউল বাবার বাড়ি থেকে যেীতুক দাবীর পাশাপাশি যখন তখন মারপিট শুরু করত সাথে শাশুড়ি ও ভাসুর সবাই মিলে আমাকে মানষিকভাবে নির্যাতন করত।

পরে জানতে পারি নেশায়ও সে আক্রান্ত।তবুও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কষ্টগুলো মুখ বুঝে সহ্য করে যাই। এরই এক পর্যায়ে সে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আমি স্বামীর বাড়িতে গেলে তাদের পরিবারের লোকজন আমাকে গালিগালাজ করে। পরে বাধ্য হয়ে বকশি বাজার জেলখানা পুলিশ দপ্তরে যাই। সেখান থেকেও আমাকে তাড়িয়ে দিয়ে বলে যে,আমার সাথে আর যোগাযোগ করবেনা।

সম্প্রতি রবিউল বাড়িতে এসে একইভাবে আমাকে মরধোর করে রক্তাক্ত জখম করে সবাইা মিলে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এক পর্যায়ে আমাকে স্বামী রবিউর সহ পরিবারের সবাই মিলে জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় আমি প্রথমে ভাঙ্গা ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভার্ত হই। এ ঘটনায় আমি ফরিদপুর আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। পারুলী আক্তারের মা জানান,মেয়ের সুখের জন্য আমরা অনেকবার চাহিদা মত যৌতুকের টাকা পরিশোধ করেছি।

কিন্ত ফুটফুটে ২টি বাচ্চা থাকা সত্যেও তারা নির্মমভাবে আমার মেয়েকে অত্যাচার-নির্যাতনের পর বাড়িছাড়া করল। আমরা এর বিচার চাই। এ ব্যপারে কারারক্ষি স্বামী রবিউলের ব্যবহ্ত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে পারুলী আক্তারের ভাসুর ইমারত মাতুব্বরের সাথে কথা হলে তিনি নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন,বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা হচ্ছে। পারুলী আক্তার ও তার পরিবারের দাবী কারা পুলিশ মহা পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেন অবিলম্বে রবিউলের বিরুদ্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেন।