সোনারগাঁ প্রতিনিধঃ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও এলাকায় রাতভর দুপক্ষের সংঘর্ষের পর পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসার পর সকালে আবারো সংঘর্ষ শুরু হলে হাজী আলাউদ্দিনের নিকটাত্মীয় শমর আলী (৫৫) নামের এক জাপা নেতা নিহত হয়েছে।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টায় দুপক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানা পুলিশ সংঘর্ষে নিহত শমর আলীর বাড়িটি ঘেরাও করে এলাকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণ নেন।

উল্লেখ্যে যে, গতরাতের সংঘর্ষে দুপক্ষের ৬ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে নয়াগাঁও এলাকায় মৃত সোমেদ আলী বেপারির ছেলে মাহিল উদ্দিন (৬০), অপর পক্ষের ছাদেক হোসেনের (৫০) অবস্থা গুরুত্বর। তাদের কে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে গেলে জানা যায়, সোনারগাঁ থানায় দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় রাতেই পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
নিহত শমর আলী হাজী আলাউদ্দিনের নিকটাত্মীয় বলে জানা যায়। হাজী আলাউদ্দিন নিজে বাদি হয়ে অভিযোগে জানান, নিজ মালিকানাধীন চিটাগাং বিল্ডার্সের জমি কেনার টাকা নিয়ে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বাড়ির ফেরার পথে বরজাহানের বাড়ির সামনে তার লোকজন আমাকে পথে আটকিয়ে সাথে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করে সাথে থাকা ১৮ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় ডাক-চিৎকারে মাহিল উদ্দিন ও তার মেয়ে নীলা (৩০), মৃত আলাউদ্দিন বেপারির ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৪০), হাজী সালাউদ্দিনের ছেলে ইলিয়াস (৩৮) এগিয়ে আসলে তাদের কে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। তারা বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। হাজী আলাউদ্দিন ১৩জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। চাঁদা চাওয়া, ১৮ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত অভিযুক্তরা হলেন, নয়াগাঁও এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলাম (৩৮), আলী আহমেদের ছেলে মোশাররফ হোসেন (৩৫), মো. আঃ খালেকের ছেলে মো. সুজন (২৬), মৃত জমশের আলীর ছেলে মো. আলেক (৫২) ও তার ছেলে মো. সুমন (৩০), আলীম আহমেদের ছেলে মো. মোতালেব (৪৫), মৃত জমশের আলীর আরেক ছেলে শাহ আলম (৪০), মো. আলেকের আরেক ছেলে মো. রাজু (২৮), মো. রেজাউলের ছেলে মো. মাহফুজ (২৮), মো. মনির হোসেন ছেলে রাশেদ (২৫), মো. মোবারক হোসেনের ছেলে মো. শাহিন (২৫), মৃত শোকাই বেপারীর ছেলে মো. ছাদেক (৫০), মান্নানের ছেলে রাসেল (২৪), মনির হোসেনের ছেলে মহসিন (২৮) এবং সিরাজুল ইসলামের ছেলে জজ মিয়া (৫০)।

সোনারগাঁ থানার তদন্ত ওসি তবিদুর রহমান তবিদ জানান, গতকাল রাতের সংঘর্ষের পর নয়াগাঁও এলাকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আজ সকাল ১১টার দিকে আবারো সংঘর্ষ হলে নয়াগাঁও এলাকার মৃত সাইদুল ইসলাম ছেলে শমর আলী (৫৫) নিহত হয়েছে এবং ৫-৬ জন আহত হয়েছে। এ ব্যাপারে মৃত শমর আলীর পক্ষে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং অপর পক্ষের একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত শমর আলীর মরদেহ নিজ বাড়িতে পৌঁছলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।