হা দি সে র নি র্দে শ না,

হজরত উবাদাহ ইবনুস সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, উবাদাহ ইবনুস সামিত (রা.)—যিনি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও লাইলাতুল আকাবার একজন নকিব। তিনি বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর পাশে একজন সাহাবির উপস্থিতিতে তিনি বলেন, তোমরা আমার কাছে এই মর্মে বায়আত গ্রহণ করো যে—

১. আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করবে না : কারণ পৃথিবীর বুকে ‘সবচেয়ে বড় জুলুম শিরক।’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ১৩)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যে আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুর শিরক না করা অবস্থায় মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (বুখারি, হাদিস : ১২৩৮)

২. চুরি করবে না : কারণ চুরি করা হারাম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ কোরো না’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৭)। ইসলামে চুরির শাস্তি হাত কেটে দেওয়া। চুরির ব্যাপারে রাসুল (সা.) এতটাই কঠোর ছিলেন যে তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! যদি মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা ফাতেমাও চুরি করে, তাহলে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে দেব। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৫৪৭)

৩. ব্যভিচার করবে না : পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না, নিশ্চয়ই তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ। (সুরা : ইসরা, আয়াত : ৩২)

৪. তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না : আমাদের সমাজে অনেক সময় গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে ফেলা হয়। কেউ তা করে থাকে অভাবের ভয়ে, কেউ দৈহিক সৌন্দর্য (ফিগার) ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে, কেউ ক্যারিয়ারের দোহাই দিয়ে, কেউ আবার অধিক সন্তান নেওয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে এমনটি করে। ইসলামী শরিয়তে এ ধরনের কারণকে সামনে রেখে সন্তান নষ্ট করা তাকে হত্যা করার শামিল। পবিত্র কোরআনেও এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, দরিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কোরো না। তাদের ও তোমাদের রিজিক আমিই দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই তাদের (সন্তানদের) হত্যা করা মহা পাপ। (সুরা : ইসরা, আয়াত : ৩১)

৫. কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে না : ইসলাম ধর্মে অন্যের গিবত করা ও কারো ওপর মিথ্যা অপবাদ চাপানো হারাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার এক লোককে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানোর অভিযোগে বন্দি করেছিলেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১৪১৭)

৬. এবং সৎকাজে (আমার) অবাধ্য হবে না : রাসুল (সা.) কখনো কাউকে অসত্ কাজের আদেশ করার প্রশ্নই ওঠে না। তবু এ ব্যাপারে বায়আত করানোর উদ্দেশ্য হলো, অসত্ কাজে কখনোই মাখলুকের আনুগত্য করা যাবে না।

তোমাদের মধ্যে যে তা পূর্ণ করবে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। আর কেউ এর কোনো একটিতে লিপ্ত হয়ে যদি দুনিয়ায় তার শাস্তি পেয়ে যায়, তবে তা হবে তার জন্য কাফফারা। আর কেউ এর কোনো একটিতে লিপ্ত হলে আল্লাহ যদি তা অপ্রকাশিত রাখেন, তবে তা আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তিনি যদি চান, তাকে মার্জনা করবেন আর যদি চান, তাকে শাস্তি প্রদান করবেন। আমরা এর ওপর বায়আত গ্রহণ করলাম। (বুখারি, হাদিস : ১৮)