মুসলমানদের অনেকেরই ভালো কাজ ও আল্লাহর ইবাদতের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। নামাজ পড়তে ইচ্ছা করে না, ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না কিংবা নিয়মিত ইবাদত করা সম্ভব হয় না। এ সব ঈমানের দুর্বলতার লক্ষণ। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ঈমানের দুর্বলতা কাটানোর কয়েকটি আমল এখানে উল্লেখ হলো-
১. এমন লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে, যাদের সংস্পর্শে গেলে আমল বেড়ে যায়। যাঁরা অন্যকে আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেন। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, হে ঈমানদাররা, আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো। (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১১৯)
২. বেশি পরিমাণে কোরআন তিলাওয়াত করুন বা শ্রবণ করুন। এ মর্মে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘…আর যখন তাদের সামনে তাঁর (আল্লাহর) আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় …। (সুরা : আনফাল, আয়াত : ২)
৩. নবী, সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়তে পারেন। কেননা মহান আল্লাহ মহানবী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের অন্তর প্রশান্ত করার জন্য পবিত্র কোরআনে নবীদের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। আর তিনি সাহাবায়ে কেরামের ঈমানকে আমাদের ঈমানের জন্য আদর্শ বানিয়েছেন। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন- …মানুষ যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আনো …। (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৩)
৪. অধিক পরিমাণে আল্লাহর জিকির করুন। দুর্বল ঈমানের সুস্থতার জন্য জিকির খুবই উপকারী। আল্লাহর জিকির অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করে। মুমিনের অন্তর জিকিরের মাধ্যমে প্রশান্ত হয়।
ইরশাদ হয়েছে- যারা ঈমানদার এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে। জেনে রেখো, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়। (সুরা : রাদ, আয়াত : ২৮)
৫. প্রকৃতিতে আল্লাহর নিদর্শনগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করুন। আকাশে মেঘ দেখলে আরবরা খুশি হতো। কিন্তু মহানবী (সা.)-এর চেহারা আজাবের ভয়ে মলিন হয়ে যেত। কেননা সামুদ জাতি আজাব বহনকারী মেঘ দেখে রহমতের বৃষ্টি ভেবে ফুর্তিতে মেতেছিল। (মুসলিম, হাদিস : ৮৯৯)
আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয়ই আসমান ও জমিন সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধসম্পন্ন লোকদের জন্য। (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে আল্লাহর জন্য ভালোবাসে, আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে, আল্লাহর জন্য প্রদান করে এবং আল্লাহর জন্য প্রদান থেকে বিরত থাকে, সে ঈমান পরিপূর্ণ করেছে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৮১)
মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ